নদিয়ার জওয়ান
পশ্চিমপাড়ার বাড়িতে ফোনে দুঃসংবাদ আসে।
ঝন্টুরা তিন ভাই, এক বোন। তাঁর বড়দা রফিকুল শেখও সেনায় রয়েছেন, বর্তমানে কাশ্মীরেই কর্মরত। মেজদা বিসারত শেখ কর্মসূত্রে সৌদি আরবে থাকেন। ঝন্টু বাড়ির ছোট ছেলে। কাশ্মীর থেকে রফিকুল ফোনে বলেন, “যত দূর জানি, সুরনকোট এলাকায় তল্লাশি অভিযানের সময়ে ভাইয়ের শরীরে গুলি লাগে। উধমপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানানো হয়, সে মারা গিয়েছে।” বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের বাড়িতে থাকেন তাঁদের বাবা সবুর আলি শেখ আর মা আকিরন শেখ। বৃদ্ধ সবুর আলি চাষবাস করেন। তিনি বলেন, “মাঠ থেকে ফেরার পথে আমার নাতনির কাছে খবরটা পাই। আমার আর একটা ছেলেও কাশ্মীরে। কী করব ভেবে পাচ্ছি না।”
এ দিন দুুপুর আড়াইটে নাগাদ তেহট্টের বাড়িতে ফোন করে খোঁজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়িতে কে কে আছেন তা জানতে চান, যে কোনও প্রয়োজনে পাশে থাকার কথাও বলেন। পরিবার সূত্রের খবর, আগামিকাল সকালে দমদম বিমানবন্দরে ঝন্টুর দেহ আসার কথা রয়েছে। সেখান থেকে সড়কপথে দেহ নিয়ে আসা হবে তেহট্টের বাড়িতে। দুই সন্তানকে নিয়ে শাহনাজেরও আগামিকাল তেহট্টে আসার কথা।
জম্মুতে আজকের অভিযানের সূত্রে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার জনকে আটক করেছে সেনা। পাহাড়ি জঙ্গলে তল্লাশিও জারি রয়েছে। পহেলগামে হামলার পরে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী ও জঙ্গিদের মধ্যে এটি তৃতীয় সংঘর্ষের ঘটনা। বৈসরনের হামলায় তিন সন্দেহভাজন জঙ্গির স্কেচ ইতিমধ্যেই প্রকাশ করা হয়েছিল। আজ ওই তিন জনের নামও জানিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। বলা হয়েছে, লস্কর-ই-তইবার সদস্য এই তিন জনের মধ্যে এক জন কাশ্মীরের অনন্তনাগের বাসিন্দা। তার নাম আদিল হুসেন ঠোকার। বাকি দু’জন পাকিস্তানি জঙ্গি বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে। এক জনের নাম আলি ভাই ওরফে তালহা ভাই। আর এক জন হাসিম মুসা ওরফে সুলেমান। এদের এক-এক জনের সম্পর্কে তথ্য দিলে ২০ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার পহেলগামের অদূরে বৈসরন উপত্যকায় ধর্মীয় পরিচয় জিজ্ঞাসা করে খুন করা হয়েছিল পর্যটকদের। সেই কথা মাথায় রেখে জম্মু-কাশ্মীরে ‘পিএম প্যাকেজ’ প্রকল্পে চাকরি পাওয়া সরকারি কর্মীদের ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। এই প্রকল্পে মূলত শরণার্থী কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছিল।