নিরাপত্তায় গাফিলতি কেন, প্রশ্ন নিহতের স্ত্রীর
সুরাত, ২৪ এপ্রিল: বেঁচে থাকলে বুধবার ৪৬ বছর হত তাঁর। সে দিনই জন্মদিন ছিল শৈলেশ হিম্মত কাঠালিয়ার। সুরাতের বাসিন্দা শৈলেশ এ বারের জন্মদিনটা সপরিবার কাশ্মীরে কাটানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার পহেলগামের জঙ্গি হামলায় প্রাণ খোয়ালেন স্টেট ব্যাঙ্কের এই ম্যানেজার। আজ সকালে সুরাতে তাঁর শেষকৃত্যে যোগ দিতে আসা কেন্দ্র ও রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের কাছে শৈলেশের স্ত্রী শীতলবেনের প্রশ্ন, এত জনপ্রিয় একটি পর্যটন কেন্দ্রে কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকবে না। কেন সব কিছু ঘটে যাওয়ার বহু ক্ষণ পরে সাহায্য এসে পৌঁছাবে। এতগুলো মৃত্যু, নিহতের পরিবার ও ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকেই।
পহেলগামে জঙ্গি হামলায় নিহত ২৬ জনের মধ্যে তিন জন গুজরাতের বাসিন্দা। বুধবার বিশেষ বিমানে শৈলেশের দেহ ফিরিয়ে আনা হয় সুরাতে। ভাবনগরে ফেরানো হয়েছে সে দিনের হামলায় নিহত বাবা-ছেলে যতীশ ও স্মিত পারমারের দেহ। সুরাতের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে মুম্বইয়ে কর্মরত ছিলেন শৈলেশ। তবে সুরাতেই তাঁর শেষকৃত্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার। শৈলেশের আত্মীয় কিষাণ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার পহেলগামে হামলার খবর শুনে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা দাদা খবর নিতে শৈলেশকে ফোন করে। ওপারে ফোন ধরে কাঁদতে থাকেন বৌদি। ওঁর মুখেই শুনি, জঙ্গিদের গুলিতে শৈলেশ মারা গিয়েছে।’’ শীতলবেন ও ছেলেমেয়েদের ফিরিয়ে আনতে পরিবারের অন্যেরা পরের দিনেই কাশ্মীর পৌঁছান। বুধবার তাঁদের এবং শৈলেশের দেহ নিয়ে গুজরাতে ফেরেন।
শৈলেশের শেষকৃত্যে আসা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সি আর পাটিলের সঙ্গে কথা বলেন শীতলবেন। শৈলেশের ক্ষুব্ধ স্ত্রী মন্ত্রীকে বলেন, ‘‘আমি কাশ্মীরের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু সেখানে নিরাপত্তাহীন এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাচ্ছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদীরা হিন্দু পুরুষদের বেছে বেছে গুলি করছিল। যত ক্ষণ দেহে প্রাণ ছিল, ওরা গুলি চালিয়ে গিয়েছে। মানুষগুলোকে মরতে দেখে জঙ্গিরা হাসাহাসি করছিল।’’ শীলতবেনের কথায়, ‘‘সকলে কাশ্মীরের মর্যাদাহানি করছে। কিন্তু আমি কাশ্মীর বা কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে নই। সমস্যাটা সরকারের। সমস্যা নিরাপত্তাহীনতার। রোজ বৈসরনে এত পর্যটকের সমাগম হয়। অথচ তার কাছাকাছি কোনও সেনা বা পুলিশের ছাউনি নেই। চিকিৎসা কেন্দ্র নেই। কেন?’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের সকলকে আজ আমার কথা শুনতে হবে। যখন সব কিছু শেষ, তখন সরকারের প্রতিনিধিরা এলেন। ছবি তুলে নিয়ে গেলেন। সব কিছু যখন শেষ হয়ে গিয়েছে, তখন শেষকৃত্যে যোগ দিয়ে কী লাভ?’’
শেতলবেনের দাবি, ‘‘আমি এর বিচার চাই। শুধু আমার স্বামী নন, যাঁরা মারা গিয়েছেন সকলের ছেলেমেয়ে ও পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকে।’’
সংবাদ সংস্থা