অভিনব নৃত্য পরিকল্পনা
জ্ঞান মঞ্চে সৃজনছন্দ আয়োজিত ‘রাসবিলাস ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। সৃজনছন্দ ওড়িশি নৃত্যে সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান। ওড়িশি নৃত্যশিল্পী ও শিক্ষক রাজীব ভট্টাচার্য শিক্ষালয়ের প্রাণপুরুষ। প্রার্থনাসঙ্গীত ‘জয় জগদীশ হরে’-র সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। নৃত্য নিবেদনে ছিলেন শ্রুতি ধর, দেবশ্রী অধিকারী, শালিনী সিংহ, অয়ন্তিকা রায়, সুরজিৎ বিশ্বাস, সৌমেন কুণ্ডু, কমলিকা বসু, শায়রী মুখোপাধ্যায়, অঙ্গনা বসু, শতরূপা সাহা ও সৃজিতা মুখোপাধ্যায়। নৃত্য পরিকল্পনা ও পরিচালনায় রাজীব ভট্টাচার্য।
এর পর একে একে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন অরুন্ধতী রায়, নীতা বিদ্যার্থী, হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায়, পাপিয়া চৌধুরী প্রমুখ। এ দিনের অনুষ্ঠানের প্রথম নিবেদন ছিল সৌরভ রায় ও সুদীপ ঘোষের কত্থক ও মণিপুরী নৃত্যের যুগলবন্দি। ভিন্ন প্রদেশের ভিন্ন আঙ্গিকের নৃত্যকলাকে একই যন্ত্রানুষঙ্গে মঞ্চস্থ করার মধ্যে সৌরভ ও সুদীপ মুনশিয়ানার স্বাক্ষর রেখে যান৷ এর পর তরানা পল্লবী ও সুফিয়ানার মেলবন্ধনে ওড়িশি ও কত্থক নৃত্যশিল্পী সুবিকাশ মুখোপাধ্যায় এবং সুব্রত পণ্ডিতের সুন্দর একটি উপস্থাপনা— আকর্ষক সঙ্গীতানুষঙ্গে। তৃতীয় নিবেদন সায়মিতা দাশগুপ্ত এবং সম্রাট দত্তের ওড়িশি ও ভরতনাট্যমের মিলিত আঙ্গিকে। শাস্ত্রীয় নৃত্যধারাকে বজায় রেখে অভিনব নৃত্য পরিকল্পনা দর্শকদের নতুনত্বের আস্বাদ দেয়। অনুষ্ঠান শেষ হয় তরুণ প্রধান পরিচালিত রায়বেঁশে নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে।
কলকাতার নৃত্যরসিক দর্শক এটি বিভিন্ন মঞ্চে ইতিপূর্বে প্রত্যক্ষ করেছেন। সুন্দর উপস্থাপনা। তবে শাস্ত্রীয় নৃত্যানুষ্ঠানের সমাপ্তি কোনও শাস্ত্রীয় নৃত্যের নিবেদনে হলে তার রেশ থেকে যায়— এখানে সেই অভাব অনুভূত হয়। অনুষ্ঠানটি সংযোজনা করেন নীলাদ্যুতি চৌধুরী। ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যে বহুর মধ্যে ঐক্যের সুরটি তুলে ধরা হয়েছিল এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। শিল্পীরা প্রত্যেকেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। অন্য আঙ্গিকের নৃত্যকলাকে সসম্মান গ্রহণ করে, আত্তীকরণ করেছেন সুন্দর ভাবে। সে দিক থেকে অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রশংসনীয়। সে দিনের নৃত্যসন্ধ্যা দর্শককে নতুন নৃত্যভাবনায় জারিত করেছিল, গতানুগতিক শাস্ত্রীয় নৃত্যের উপস্থাপনার পরিবর্তে অন্য এক ধরনের মঞ্চায়নের আশ্বাস দিতে সক্ষম হয়েছিল।
শর্মিষ্ঠা দাশগুপ্ত
নৃত্য পরিবেশনে শিল্পীবৃন্দ