বিসিকেভি-তে সাম্প্রদায়িক পোস্টার, তদন্ত
নিজস্ব সংবাদদাতা
কল্যাণী রাতের অন্ধকারে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিসিকেভি) হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের কৃষি অনুষদ ভবনের নোটিস বোর্ডে সাঁটানো হয়েছিল সাম্প্রদায়িক পোস্টার। সে পোস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাদের প্রবেশাধিকার নেই, সে সংক্রান্ত আপত্তিকর মন্তব্য ছিল। প্রতিবাদে, শুক্রবার পাল্টা পোস্টারে ক্যাম্পাস ছেয়ে ফেললেন পড়ুয়ারা। কে বা কারা ওই পোস্টার দিয়েছিল, জানা যায়নি। তবে তদন্তের জন্য নদিয়ার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আট সদস্যের দল গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি, সম্ভবত বুধবার রাতে ওই পোস্টার লাগানো হয়। বৃহস্পতিবার তা নজরে আসে। খানিক বাদেই তা সরানো হয়, কিন্তু তার আগেই সমাজমাধ্যমে সে ছবি ছড়ায়। ওই দিনই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, ঘটনাটি গুরুতর এবং অপরাধমূলক, কারা তার পিছনে রয়েছে তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ক্যাম্পাসে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে। বিসিকেভি-র ডিন অব স্টুডেন্টস’ ওয়েলফেয়ার অনুপম পারিয়ারি নির্দেশিকা জারি করে জানান, অশান্তি বাধানো বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার চেষ্টা হলে, দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। এ রকম পোস্টার যাতে ক্যাম্পাসে আর না লাগানো হয়, সে দিকে কড়া নজর রাখার কথাও বলেছেন তিনি।
এ দিন ‘ইউনাইটেড স্টুডেন্টস অফ বিসিকেভি’ মৌলবাদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাস জুড়ে পোস্টার দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুভাষচন্দ্র কোলে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন অপ্রীতিকর পোস্টার লাগানো একেবারেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করার জন্যই এমন ঘটানো হয়েছে।” এসএফআইয়ের নদিয়া জেলা সম্পাদক শৌর্যবন্ত ডি চৌধুরীর মতে, “ সাম্প্রদায়িক এবং মৌলবাদী মানসিকতার মানুষ ছাড়া অন্য কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রকম পোস্টার দিতে পারে না।”
টিএমসিপি-র বিসিকেভি শাখার সাধারণ সম্পাদক অনির্বাণ দাসের দাবি, “আমার ব্যক্তিগত ধারণা, এবিভিপি-সমর্থক কিছু ছাত্র এতে জড়িত এবং কিছু অধ্যাপক এই ঘটনায় ইন্ধন দিয়েছেন।
কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে কড়া শাস্তি দিতে হবে।” তবে এবিভিপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার কার্যকর্তা নরোত্তম বিশ্বাসের দাবি, “টিএমসিপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমরা কোথাও কোনও পোস্টার দিইনি। এ ধরনের পোস্টারের সংস্কৃতিতে আমরা
বিশ্বাসী নই।”
সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী পোস্টার। শুক্রবার হরিণঘাটায় বিসিকেভি ক্যাম্পাসে। ছবি: অমিতকুমার মণ্ডল