হিমাংশীর বার্তার প্রশংসায় প্রাক্তন নৌপ্রধানের স্ত্রী
সেকেন্দরাবাদ, ৩ মে: পহেলগামে নিহত নৌঅফিসার লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালের স্ত্রী হিমাংশী যে ভাবে ঘৃণা ও বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বার্তা দিয়েছেন, তার জন্য তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রাক্তন নৌপ্রধানের স্ত্রী
ললিতা রামদাস।
পহেলগামের ঘটনার দিন থেকেই সবচেয়ে বেশি ভাইরাল হয়েছিল বৈসরনের প্রান্তরে স্বামীর পাশে বসে থাকা হিমাংশী নারওয়ালের ছবি। তিনিই হয়ে উঠেছিলেন পহেলগামের মুখ। মাত্র ছ’দিন আগে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পরে মধুচন্দ্রিমায় কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন ওঁরা। সেখানে ওই নৃশংস অভিজ্ঞতার পরেও হিমাংশী বলেছেন, ‘‘আমার স্বামী হামলার শিকার হয়েছেন, এটা আমার পরিবার ও গোটা দেশবাসীর জন্যই দুঃখজনক। তবে দয়া করে এই হামলার জন্য পুরো মুসলিম সম্প্রদায় বা কাশ্মীরি জনগণকে দায়ী করবেন না। কিছু উগ্রপন্থী সব সময় সমাজে বিভেদ ছড়াতে চায়। কিন্তু সাধারণ কাশ্মীরিরা আমাদের অনেক সহায়তা করেছেন, পাশে থেকেছেন। আমার স্বামীর চিকিৎসার সময়ে সাধারণ কাশ্মীরিরা রক্তদান করেছেন। তাঁরাই আসল কাশ্মীর।’’
ছাব্বিশ বছর বয়সি লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়াল ছিলেন হরিয়ানার কর্নালের বাসিন্দা। ১ মে তাঁর জন্মদিনে তাঁর স্মৃতিতে কর্নালে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানেই কথাগুলো বলেন হিমাংশী। এর জন্য গেরুয়া শিবিরের অনেকেই তাঁর সমালোচনা করেছেন।
কিন্তু হিমাংশীর পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রয়াত অ্যাডমিরাল এল রামদাসের স্ত্রী এবং প্রয়াত অ্যাডমিরাল আর ডি কাটারির মেয়ে ললিতা রামদাস। একটি খোলা চিঠি লিখে হিমাংশীকে ‘আদর্শ ফৌজি স্ত্রী’ বলে অভিহিত করেছেন ললিতা। তেলঙ্গানার সেকেন্দরাবাদের বাসিন্দা ললিতা লিখেছেন, ‘‘আমি বারবার সংবাদমাধ্যমে তোমার কথার ক্লিপিং দেখছি। আমি তোমার জন্য গর্বিত। পহেলগামে এত ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পরে মুসলিম ও কাশ্মীরিদের উপর বর্ষিত ঘৃণার বিরুদ্ধে তুমি কথা বলছ। তোমার শক্তি, সংযম এবং দৃঢ়তা সত্যিই অসাধারণ! এই সময়ে এর খুব প্রয়োজন।’’ ললিতা বলেন, ‘‘তুমি এক জন আদর্শ ফৌজি স্ত্রী হিমাংশী। সেবার মানসিকতা, সংবিধান এবং আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের প্রতি তুমি বিশ্বস্ত। তুমি এমন এক জন নারী, যার একটা স্বচ্ছ মন আছে। বিনয়ের মতো নৌবাহিনী অফিসারের জন্য তোমার চেয়ে সাহসী জীবনসঙ্গী আর কেউ হতে পারত না। তুমি এই দেশের প্রতিটি চিন্তাশীল নাগরিকের ভাবনা এবং অনুভূতির প্রতিধ্বনি করেছ।” সংবাদ সংস্থা