প্রয়োজনে ৩৫৬ ধারায় ব্যবস্থা,
কেন্দ্রকে রিপোর্ট রাজ্যপালের
নিজস্ব সংবাদদাতা
মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তির প্রেক্ষিতে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট দিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সূত্রের খবর, পুলিশের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে প্রয়োজনে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা (অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি শাসন) অনুযায়ী রাজ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয় যাতে, সেই কথাও রিপোর্টে বলেছেন তিনি। বোসের রিপোর্ট সামনে আসার পরেই পাল্টা সরব হয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
অশান্তির ঘটনার প্রেক্ষিতে মুর্শিদাবাদ-সফর করেছিলেন রাজ্যপাল। তার পরে শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। রাজভবন সূত্রে খবর, তার আগেই কেন্দ্রকে মুর্শিদাবাদ সংক্রান্ত রিপোর্টটি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। রিপোর্টে তিনি বলেছেন, ‘মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। স্থানীয় প্রশাসন ব্যর্থ।’ তাঁর বক্তব্য, পুলিশের ভূমিকা নিন্দনীয়। মানুষের পুলিশের উপরে আস্থা নেই। অনুসন্ধান কমিশন নিয়োগ, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে ৩৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও রিপোর্টে বলেছেন রাজ্যপাল। আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর যে জেলাগুলিকে (মালদহ, মুর্শিদাবাদ) নিয়ে ‘উদ্বেগ’ রয়েছে, সেখানে নিজেদের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় বিএসএফ আরও চৌকি তৈরি করতে পারে বলেও জানিয়েছেন বোস।
বিষয়টি সামনে আসার পরেই রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “রাজ্যপালের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজনৈতিক দায় থেকে তাঁর এই রিপোর্ট। উনি জানেন, মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। ফলে, অবনতির প্রসঙ্গই আসে না।” তাঁর সংযোজন, “সীমান্তের ও-পার থেকে কেউ ঢুকে উস্কানি দিলে তা ঠেকানোর দায়িত্ব বিএসএফের। বিএসএফ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্যপালের রিপোর্টে বিএসএফ বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।”
রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য পাল্টা বলেছেন, “বাংলার গলি থেকে রাজপথ, সাধারণ মানুষের যা দাবি, সেটাই রাজ্যপালের গলায় প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তবে নীতিগত ভাবে আমরা ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের বিরোধী। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে তৃণমূলকে সরাতে চাই।” বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘রাজ্যপালের রিপোর্টকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে ৩৫৬ জারি করার জন্য যে রিপোর্ট দরকার, তা উনি দেননি। উনি বলেছেন, পুনরায় এ রকম ঘটনা হলে ৩৫৬ জারি করা যেতে পারে।’’