রঙের রাজ্যে
প্রথাগত আঁকাআঁকির বদলে এখন ফ্লুয়িড আর্টে মজেছে ছোটরা
অনেক স্কুলেই গরমের ছুটি পড়ে গিয়েছে। বাড়িতে ছোটদের সারাদিন ব্যস্ত রাখার নানা পন্থা ভাবতে হচ্ছে বড়দেরও। আঁকাআঁকি, রঙের জগৎ ছোটদের ভারী পছন্দের। কিন্তু সেখানেও কাগজে রং-তুলি, প্যাস্টল অনেক সময়ে একঘেয়ে লাগে। তা কাটাতে নতুন বৈচিত্র নিয়ে আসা যায়। ফ্লুয়িড পেন্টিং এখন বেশ জনপ্রিয়। অনেক আঁকার স্কুল বা সামার ক্যাম্পগুলো এই পদ্ধতি শেখায়। বাড়িতেও বাচ্চারা ফ্লুয়িড পেন্টিং করতে পারে। এর জন্য খুব বেশি জিনিসের প্রয়োজন নেই। অ্যাক্রিলিক রং এবং ক্যানভাসই যথেষ্ট।
ফ্লুয়িড আর্টের জন্য পেন্সিল, তুলি কোনও কিছুর প্রয়োজন পড়ে না। ক্যানভাসের উপরে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে রং ঢেলে দিতে হয়। তার পর ক্যানভাস এ দিক-ও দিক করে সেই রং ছড়িয়ে দিতে হবে। রঙের ধারাই তৈরি করে দেবে ছবি। কোন পদ্ধতিতে ক্যানভাসে রং ঢালা হবে সেই কায়দা আয়ত্তে আনতে হবে। কী ভাবে শেডিং করা হবে, সেটাও শেখা জরুরি। ফ্লুয়িড পেন্টিং দেখতে ভারী সুন্দর। কিন্তু এই পদ্ধতিতে অনেক রং নষ্ট হয়। তাই ছোটদের প্রথমে অল্প রং দিয়ে ছোট ক্যানভাসে অভ্যেস করিয়ে নিয়ে, তার পর বড় ক্যানভাস দেওয়া উচিত।
কয়েকটি পদ্ধতি
- একটা ছোট কাপ কিংবা গ্লাসে পছন্দ মতো রং ঢালুন। প্রথমে একটি শেড দিন। তার পর লেয়ার করে আর একটি, তার উপরও আরও একটি রং। এ বার গ্লাস থেকে রং সরাসরি ক্যানভাসের উপরে এলোমেলে করে ঢেলে দিন। এ বার ক্যানভাস ধরে আলতো করে এ দিক ও দিক নাড়াতে হবে। এতে রং নিজের মতো বয়ে যাবে ক্যানভাস জুড়ে আর তৈরি হবে একটা রঙিন জগৎ। একে বলে ডার্টি পোর টেকনিক।
- ফ্লিপ কাপ পদ্ধতিতে, কাপের মধ্যে তিন-চার রকমের রং মিশিয়ে নিন। সেটি ক্যানভাসের মাঝখানে রেখে উল্টে দিন। এ বার ক্যানভাসটা হালকা নাড়াচাড়া করলে রং নিজের মতো করে ডিজ়াইন তৈরি করে নেবে।
- এই দুই পদ্ধতি ঠিক মতো আয়ত্তে এসে গেলে ট্রি রিং স্টাইল ব্যবহার করা যায়। এখানে দুটো কাপে আলাদা আলাদা রং ভরতে হবে। এ বার ক্যানভাসের মাঝে দুটো কাপ থেকে একসঙ্গে রং ঢালতে হবে। এই পদ্ধতিতে শেডে বৈচিত্র আসে।
কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে। যেহেতু এতে ক্যানভাস থেকে রং পড়ে, তাই নীচে কাগজ বা বাতিল ট্রে রাখা যায়। ক্যানভাসে রং ঢেলে একটা সরু কাঠি দিয়ে আঁকিবুকি কেটে আলাদা ডায়মেনশনও আনা যায়। বড় ক্যানভাসে ফ্লুয়িড পেন্টিং বাড়ির দেওয়ালে সাজাতে পারেন। ছোট ক্যানভাসে এটি করে, কোস্টার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। প্লাস্টিকের ট্রে কিনে তাতেও এই পদ্ধতিতে রং করতে পারেন। তা হলে গরমের ছুটি এ ভাবেই রঙিন হয়ে উঠুক।