মমতার পদত্যাগ চাইলেন শুভেন্দু
নিজস্ব সংবাদদাতা
সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের চার সপ্তাহের মধ্যে ২৫% মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরেই শুক্রবার বিরোধীরা এক যোগে রাজ্য সরকার এবং তার নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলল। সরকারি কর্মচারীদের প্রতি বঞ্চনার ‘নৈতিক দায়’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পক্ষান্তরে, এই নির্দেশ আইনি বিষয় বলে সরাসরি মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
ডিএ-নির্দেশ সামনে আসার পরেই বিরোধী দলনেতা বলেছেন, “এটা পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারীর জন্য বিশাল জয়, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দাম্ভিক ও নির্দয় রাজ্য সরকারের অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছেন। প্রথমে ট্রাইব্যুনাল থেকে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।” এই সূত্রেই তাঁর বক্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ডিএ অধিকার নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিলমোহর পড়ল যে, ডিএ কর্মচারীদের অধিকার। আশা করি, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিন বঞ্চিত রাখার জন্য নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে মমতা পদত্যাগ করবেন।” ডিএ আদায়ের লড়াইয়ে আইনজীবীদের কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি বিজেপির অনুমোদিত সংগঠন কর্মচারী পরিষদের কর্মকর্তা এবং সদস্যদেরও অভিনন্দন জানিয়েছেন শুভেন্দু।
এই প্রেক্ষিতে সিপিএম এবং কংগ্রেস নিশানা করেছে রাজ্য সরকারের ‘খয়রাতির রাজনীতি’কে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “আপাতত সরকারি কর্মচারীদের ২৫% ডিএ দিতে হবে সরকারকে। বাকি কথা পরে। রাজ্যের কোমর ভেঙে যাবে কেন? জনতার টাকায় খেলা-মেলা, ফষ্টি-নষ্টি ক্লাবের তৃণমূল-ভাতা, খয়রাতি-অনুদান-পুষিয়ে দেওয়া, জগন্নাথ ধুমধাম চলছেই! বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সম্পত্তি বেড়েছে হাজার গুণ। তার বেলা?”
একই সুরে ভোট-অঙ্কের কথা স্মরণ করাতে চেয়েছেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীও। তাঁর বক্তব্য, “ক্লাবকে টাকা দিলে বেশি ভোট। সরকারি কর্মচারীরা মুখ্যমন্ত্রীর নামে জয়ধ্বনি করবেন, তা নিশ্চিত নয়। তাঁরা দান নয়, অধিকার চেয়েছেন। কিন্তু বাংলার মানুষের ভবিতব্য ভিক্ষাবৃত্তি। অধিকার ভবিতব্য নয়, এটাই মুখ্যমন্ত্রী বলতে চান। শিক্ষক-শিক্ষিকা, সরকারি কর্মচারীদের দরকার নেই। কারণ, তাঁদের ভোটে সরকার বদল হবে না।”
যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনই সরাসরি কোনও মন্তব্য করেনি শাসক দল। তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, “এটা পুরোপুরি আইনি বিষয়। রায় পর্যালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।”