ডিএ-নির্দেশ: বিজেপির কৃতিত্ব দাবি মালবীয়ের
নিজস্ব সংবাদদাতা
সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের চার সপ্তাহের মধ্যে ২৫% মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরে এই ‘জয়ে’র কৃতিত্ব বঙ্গ-বিজেপির বলে দাবি করেছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়। তাঁর এই দাবিকে নস্যাৎ করে মামলার সময়-ক্রম স্মরণ করিয়ে দিয়ে এটা সব রাজ্য সরকারি কর্মচারীর জয় বলে শনিবার পাল্টা বিজেপিকে নিশানা করেছে কংগ্রেস এবং তাদের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি অনুমোদিত সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেই শুক্রবার বিজেপি নেতা মালবীয় বলেছিলেন, ‘এটি বাংলার কর্মচারীদের এবং বঙ্গ-বিজেপির একটি প্রধান
জয়। বাংলার সরকারি কর্মচারীরা যাতে তাঁদের পাওনা পান, সেটা বিজেপি নিশ্চিত করবে।’ এর সঙ্গেই, তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকারের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী তথা কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সওয়াল করেছিলেন, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে কটাক্ষ
করেছিলেন অমিত।
এই প্রেক্ষিতেই প্রদেশ কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, তাদের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি অনুমোদিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় ২০১৬-য় ডিএ সংক্রান্ত মামলাটি করেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন
সংগঠনের সভাপতি শ্যামল মিত্র-সহ অন্যেরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও এ দিন মলয়, শ্যামল, আইএনটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি কামারুজ্জামান কামারকে পাশে বসিয়ে সরব হয়েছেন। শুভঙ্করের প্রশ্ন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে বিজেপি বলছে এটা তাদের জয়। এই মামলায় তারা কোথায় ছিল? এমন দাবি কেন?” মামলার খুঁটিনাটি জানিয়ে মলয়ও বলেছেন, “আমরাই প্রথম মামলা করেছিলাম। সুপ্রিম কোর্টে ১৯টি শুনানির
পরে জয় এসেছে। বিজেপি সমর্থিত একটি সংগঠন এর কৃতিত্ব দাবি করেছে। আমরা বিভ্রান্তি এড়াতে
কৃতিত্ব নিয়ে বিতর্ক চাই না।” তাঁর সংযোজন, “কাকুতিমিনতি করে অনেক পরে বিজেপি সমর্থিত সংগঠনটি মামলায় যোগ দিয়েছিল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজের টাকায় এক জন বড় আইনজীবীকে সুপ্রিম কোর্টে দাঁড় করিয়েছিলেন।”
বিজেপি প্রভাবিত রাজ্য কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের অবশ্য পাল্টা বক্তব্য, “২০১৬ সাল থেকে আমরা পৃথক মামলা করেছি। হাই কোর্টে মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত হই। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী রায়ে লেখা আছে, মামলাকারীদের আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়ার আবেদনের ভিত্তিতেই রায় হয়েছে। পাটওয়ালিয়া কর্মচারী পরিষদের
আইনজীবী ছিলেন।”
প্রসঙ্গত, বামেদের সূত্রেও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, মামলার অন্যতম আইনজীবী ছিলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সরকারকে ফের নিশানা করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “সরকার মেলা-খেলা করে টাকার শ্রাদ্ধ করেছে। আমরা একদা বিধানসভায় হিসাব দিয়ে বলেছিলাম, শূন্যপদ রেখে এবং ডিএ না-দিয়ে সরকার প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা লুট করেছে। ডিএ যে অধিকার, সেটাই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রমাণিত হয়েছে। আর ডিএ দেওয়ার টাকা সরকারের কাছে রয়েছে।”