পোসেরামরা কি বোড়ে, প্রশ্ন তুলে দেয় ছবি বদলের সেতু
দন্তেওয়াড়া: চেয়েছিলেন যোগাযোগের সেতু। সেই ‘অপরাধে’ গণ আদালতে ‘পুলিশের চর’ তকমা দিয়ে মাওবাদীরা চরম শাস্তি দিয়েছিল সরপঞ্চ পোসেরাম কশ্যপকে। ইন্দ্রাবতী নদীর উপর নতুন সেতুর নাম এখন ‘স্বর্গীয় শ্রী পোসেরাম
কশ্যপ সেতু’।
বছর তিনেক আগে সাড়ে ছ’শো মিটার সেতুটি তৈরি হয়েছে। অথচ বছর সাতেক আগেও এই নদীর স্রোত বয়ে নিয়ে যেত গ্রামবাসীর হতাশা, যন্ত্রণা আর মৃত্যু। সে গ্রামের নাম ছিন্দনার। দন্তেওয়াড়ার গিদম তহসিলের সেই জনজাতি গ্রাম, যেখানে এক সময় প্রশাসনের নাম উচ্চারণ করাও ছিল ‘অপরাধ’।
ইন্দ্রাবতীর এ পারে ছিন্দনার। নদীর ও পারে চেরপাল, ছোটে কারকা, তুমরিগুন্ডা, পাহুরনার, কউরগাঁওয়ের মতো প্রায় তিরিশটি গ্রামের সঙ্গে দন্তেওয়াড়ার সহজ যোগাযোগ ছিল না। নৌকাই ছিল ভরসা। পোসেরাম সমস্যাটা বুঝেছিলেন। তাই প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে ইন্দ্রাবতীর উপর সেতু চেয়েছিলেন। কিন্তু খবর পৌঁছে গিয়েছিল মাওবাদীদের কাছে। পর দিন ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই, দিনের আলোয় গ্রামের মাঝমাঠে গণআদালত বসিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল পোসেরামকে। বড় ছেলে ধনীরাম বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন। ছোট ছেলে কেশব তখনও কিশোর। বাবার সেই মৃত্যুকথা কাঁটার মতো বিঁধে আছে দুই ভাইয়ের মনে।
আজ নদীর উপর দাঁড়িয়ে পোসেরামের নামাঙ্কিত সেতু। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সেতুর উদ্বোধন করেছিলেন ছত্তীসগঢ়ের তৎকালীন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল। গ্রামবাসীরা জানালেন, পোসেরামের নামাঙ্কিত ওই সেতুর এক দিকে ভূপেশ বঘেল, অন্য দিকে তৎকালীন পূর্তমন্ত্রীর ছবি ছিল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বিজেপি সরকার আসার পর সেই ছবি খুলে ফেলে বর্তমান বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই এবং পূর্তমন্ত্রী অরুণ সাও-এর ছবি দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানালেন, সরকার বদল হলে ছবিও বদলে যায়, এটাই এখানকার দস্তুর।
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় এখানে পিচের রাস্তা। গ্রামে পৌঁছলে চোখে পড়ে পানীয় জল প্রকল্প, সিআরপি ক্যাম্প। বস্তার ফাইটার্স এবং ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি)—এর টহলদারি, গ্রামবাসীদের সঙ্গে বাহিনীর সদস্যদের কথাবার্তা এখন নিত্যদৃশ্য।
তা সত্ত্বেও ছিন্দনারের বর্তমান সরপঞ্চ নাম বলতে রাজি নন। বছর পঁয়তাল্লিশের মানুষটি