ট্রেনের দেরিতে বিমান হাতছাড়া, ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ রেলকে
মেহবুব কাদের চৌধুরী
গাফিলতির দায়ে ভারতীয় রেলকে সব মিলিয়ে প্রায় চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
২০১৭ সালের জুলাইয়ে কলকাতা ও হুগলির বাসিন্দা ১২ জন পর্যটক সিমলা বেড়াতে যান। সিমলা থেকে ফেরার সময়ে চণ্ডীগড় থেকে দিল্লিগামী সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস ধরেন তাঁরা। কিন্তু সেই ট্রেন পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে দিল্লিতে পৌঁছনোয় কলকাতাগামী বিমান ধরতে পারেননি ওই পর্যটকেরা। শেষে দিল্লি থেকে কলকাতাগামী অন্য বিমান ধরতে তাঁদের বাড়তি ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ২৮১ টাকা খরচ হয়। রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে প্রথমে কলকাতা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন তাঁরা। জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত তাঁদের আবেদন বাতিল করায় দলটি রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করে। সম্প্রতি রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত রেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে, রায় বেরোনোর ৬০ দিনের মধ্যে পর্যটকদের বিমানের টিকিট খরচ বাবদ ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ২৮১ টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে, আট বছর আগে থেকে বিমানের টিকিট মূল্যের উপরে ৯ শতাংশ হারে সুদও দিতে হবে। যাত্রীদের মানসিক যন্ত্রণা, হয়রানির জন্য রেলকে বাড়তি এক লক্ষ টাকা দিতেও নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। পাশাপাশি, মামলার খরচ চালানোর জন্য রেলকে মামলাকারীদের ১০ হাজার টাকা দিতে হবে।
সিমলা থেকে ফেরার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিলেন পেশায় আইনজীবী রঘুনাথ চক্রবর্তী। তিনি মামলাকারীদের আইনজীবীও ছিলেন। রঘুনাথের অভিযোগ, ‘‘২০১৭ সালের জুলাইয়ের সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। চণ্ডীগড় থেকে দিল্লিগামী ট্রেন পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছনোয় আমাদের নির্ধারিত বিমান আগেই ছেড়ে গিয়েছিল। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ২৮১ টাকা দিয়ে অন্য বিমানের টিকিট কাটি।’’ রঘুনাথ জানান, জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে তাঁদের আবেদন বাতিল হওয়ায় ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন। রঘুনাথের অভিযোগ, ‘‘রেলের তরফে বার বার দাবি করা হয়, এটা তাদের ইচ্ছাকৃত ভুল নয়। রেললাইন মেরামতির জন্য বাড়তি সময় লেগেছিল।’’ যদিও রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এ ক্ষেত্রে রেল তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। মনে রাখতে হবে, ট্রেনে হাজার হাজার মানুষ জরুরি প্রয়োজনে যাত্রা করেন। তাঁদের দিকটাও ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে রেললাইন মেরামতি হলে আগে কেন যাত্রীদের এসএমএস, ওয়টস্যাপে জানানো হল না?’’ রেল জানিয়েছে, আদালতের রায়ের কপি তারা পায়নি। রায়ের কপি হাতে পেলে তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।