মৃত্যুতেও চলল উৎসব
আমরা অনুষ্ঠানের সূচি বদলে ফেলি এবং স্থানীয় প্রশাসনের পরামর্শ
মতো চলেছি।”
কেন এই ঘটনা ঘটল? আঙুল উঠছে পুলিশ ও প্রশাসনের গাফিলতির দিকে। অভিযোগ, এই ভিড় সামলানোর জন্য একেবারে তৈরি ছিল না স্থানীয় পুলিশ। তাঁরা যে সংখ্যক দর্শক আন্দাজ করেছিলেন, এ দিন তার চেয়ে অনেক বেশি ভিড় হয়। যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি পুলিশ ও প্রশাসন।
এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দোষারোপের পালা। ঘটনার জন্য রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে দায়ী করেছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, এই ঘটনার জন্য দায়ী রাজ্য সরকারের চূড়ান্ত গাফিলতি। প্রচার পাওয়ার উদ্দেশে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া হয়। কর্নাটকের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারমাইয়ার বক্তব্য, “অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। এর থেকে বড় আকারের ঘটনাও ঘটেছে। বেঙ্গালুরুর ঘটনার জন্য কোনও অজুহাত দিচ্ছি না...তবে কুম্ভমেলাতেও ঘটেছিল...সেখানে ৫০-৬০ জন মানুষের
মৃত্যু হয়েছিল।”
মর্মান্তিক ঘটনার পরেও কেন বিজয়োৎসব বন্ধ হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দেখে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব নাসির আহমেদ বলেছেন, “অনেক ক্রিকেটারই আজ রাতে দেশ ছেড়ে চলে যাবেন। তাই অন্য দিন এই অনুষ্ঠান করার সময় ছিল না।” তিনি আরও বলেন, “এত মানুষ যে জড়ো হয়ে যাবে, তা কেউ ভাবতেও পারেনি। হাতে খুব অল্প সময় ছিল। গত কালই ফাইনাল ছিল। আর আজই এই অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। এই সময়ে যত দূর যা ব্যবস্থা করার, করা হয়েছে।” উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারও ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে সাফাই দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার জেরে অনুষ্ঠানের সময় কমিয়ে মাত্র ১০ মিনিটের করে দেওয়া হয়।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও এই ঘটনার দায় নিতে অস্বীকার করেছে। বোর্ড আঙুল তুলেছে সংগঠকদের দিকে। ভারতীয় বোর্ডের সচিব দেবজিৎ সইকিয়ার মতে, বিজয়োৎসব ঘিরে পরিকল্পনা আরও ভাল হওয়া উচিত ছিল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে তিনি বলেছেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এত সুন্দর একটা আইপিএলের শেষটা এই রকম মর্মান্তিক হয়ে গেল। সংগঠকদের আরও ভাল করে পরিকল্পনা করা উচিত ছিল।”
সইকিয়া মনে করিয়ে দিয়েছেন, অতীতেও আইপিএল জেতার পরে উৎসব হয়েছে। কিন্তু এই রকম বিপর্যয় কোথাও হয়নি। তাঁর কথায়, “গত বছর কেকেআর আইপিএল জেতার পরে কলকাতাতেও উৎসব হয়েছিল। কিন্তু সেখানে তো কিছু হয়নি।” টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের ঘটনা টেনে এনে বোর্ড সচিব বলেন, “বিশ্বকাপ জয়ের উৎসবের সময় তো মুম্বইয়ে জনসমুদ্র দেখা গিয়েছিল। সব কিছু ঠিকঠাক হয়েছে। যখন কেউ এই ধরনের একটা বিজয়োৎসব হয়, তখন তাদের উচিত ঠিক মতো সব ব্যবস্থা করা। এখানে কোথাও গাফিলতি নিশ্চয়ই হয়েছে।”
কারণ খোঁজার পালা চলবে। জারি থাকবে দোষারোপও। আর চোখের জল ফেলবে স্বজনহারা পরিবারগুলি।