ইঙ্গিত আমেরিকা থেকে তেল-গ্যাস আমদানি বৃদ্ধির
নয়াদিল্লি, ৪ জুন: ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা চলছে জোরকদমে। নয়াদিল্লিতে এই সপ্তাহে পরবর্তী দফার আলোচনা হওয়ার কথা। তার আগে সরকারি সূত্রের খবর, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ থেকে শেল গ্যাস, অশোধিত তেল এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বাড়াতে পারে ভারত। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে ‘খুশি’ করতেই কি এই সিদ্ধান্ত, যাতে দ্রুত অন্তর্বর্তী বাণিজ্য চুক্তি সেরে ফেলা যায়? বস্তুত, ৯ জুলাই পর্যন্ত আমেরিকার আমদানি শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত। তার পরে ভারতীয় পণ্য সে দেশে ঢুকলেই বসবে ২৬% শুল্ক। রফতানি বাণিজ্যে এই ধাক্কা আটকাতে ওই সময়ের মধ্যে আংশিক বাণিজ্য চুক্তি করতে মরিয়া মোদী সরকার।
বুধবার সরকার সূত্রের দাবি, ভারত প্রথাগত বাজারের বাইরে থেকেও এখন শেল গ্যাস, অশোধিত তেল এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার নীতি নিয়েছে। যাতে কোনও কারণে কোথাও দাম বাড়লে আমদানি থমকে না যায়। আমেরিকা থেকে এগুলি আরও বেশি কেনার ভাবনা সেই পরিকল্পনারই অঙ্গ। তার উপর সে দেশে এগুলির দাম কম। সূত্রটির বক্তব্য, নয়াদিল্লির পক্ষে সুবিধাজনক, তাই বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রেও ভারত দেখেশুনে এগোচ্ছে।
আমেরিকায় ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে আজ থেকে ৫০% শুল্ক চাপাতে চলেছেন ট্রাম্প। এই অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে সূত্রটির বার্তা, ভারতের জন্য যেটা ভাল হবে, সেই পথেই এগোবে কেন্দ্র। উল্লেখ্য, ইস্পাত-অ্যালুমিনিয়ামের এমন চড়া শুল্কে দেশের রফতানি শিল্প বিরাট ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা। বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, আমেরিকার বাজার বন্ধ হওয়ায় অনেক দেশ ভারতে পণ্যগুলির রফতানি বাড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিপাকে পড়বে দেশীয় উৎপাদকেরাও। লোকসান গুনতে পারে বহু ভারতীয় সংস্থা।
সরকারি সূত্র এ দিন দাবি করে, ‘‘পুরো বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত। অন্যান্য দেশের তুলনায় কতটা কী পাচ্ছি, তার উপর নির্ভর করবে চুক্তিতে চূড়ান্ত ভাবে কী থাকবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘রফতানি বাড়ছে ...আমেরিকা থেকে আমরা অনেক কিছুই আমদানি করতে পারি ...যেমন শেল গ্যাস, এলএনজি, অশোধিত তেল। যত বেশি সংখ্যক দেশ থেকে তা কেনা যাবে, ততই সুবিধা পাব আমরা (ভারত)। দামও আমেরিকাতে কম।’’
তবে ভারত ইতিমধ্যেই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) ইস্পাত-অ্যালুমিনিয়ামে শুল্কের বিরুদ্ধে আবেদন করে রেখেছে। তাদের দ্বারস্থ হয়েছে গাড়ির যন্ত্রাংশে চাপানো শুল্ক নিয়েও। এই ধরনের সুবিধা অন্য পণ্যে নেওয়া হবে কি না, তার উত্তরে সূত্রটির দাবি, ‘‘ভারতের পক্ষে কোনটা ভাল, সেটা দেখা হবে। সেই অনুসারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ...আদালতের ওই নির্দেশের কারণে এখন অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে ... দেখা হবে কী ভাবে তার উত্তর দেওয়া যায়।’’
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ প্রথম ধাপে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি করতে চায় নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটন। ভারত চায় তার আগে অন্তর্বর্তী চুক্তিতে ২৬% শুল্ক পুরোটাই তোলা হোক। ট্রাম্প চান আমেরিকার বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক কমাক ভারত।
সংবাদ সংস্থা