আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দোকানে ঢুকে হুমকি তৃণমূল নেতার
শান্তশ্রী মজুমদার নীহার বিশ্বাস
বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর: আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দোকানে ঢুকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে। গত শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার বেলবাড়ি ২ পঞ্চায়েতের ঘটনা। সমাজমাধ্যমে ‘ভাইরাল’ হয়েছে যুব নেতা পিন্টু ঘোষের কোমর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বার করার সেই ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার পত্রিকা)। অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশের দাবি, তিনি পলাতক। তবে পিন্টুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে পিস্তলের কার্তুজ।
পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুর ২টো নাগাদ বেলবাড়িতে ওই মুদিখানায় যান পিন্টু এবং তাঁর এক সঙ্গী। অভিযোগ, দোকান মালিকের ছেলে অভিজিৎ দাসকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁরা জানতে চান, কার অনুমতিতে দোকানে মেরামতির কাজ করা হচ্ছে। মালিককে ডেকে আনতে বলা হয়। মালিক নিরঞ্জন দাস জেলার বাইরে ছিলেন। তাঁকে দেখা করার হুমকি দিয়ে দোকান ছাড়েন পিন্টু ও তাঁর সাগরেদ। বিকেলে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
রাতেই পিন্টুর বাড়িতে হানা দেয় জেলা পুলিশ। তাঁকে পাওয়া না গেলেও বাড়ি থেকে পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল বলেন, “অভিযোগ হয়েছে। মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” এ প্রসঙ্গে জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি অম্বরীশ সরকার অবশ্য বলেন, “সংগঠন এ কাজ সমর্থন করে না। গঙ্গারামপুর ব্লক যুব সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার কথা জানাজানি হতে ভিডিয়ো ফুটেজ়-সহ সমাজমাধ্যমে গঙ্গারামপুরের বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায় লেখেন, “ইনি গঙ্গারামপুরের মন্ত্রীর বাড়ির খাস লোক। পিস্তল দেখিয়ে দোকানে তোলাবাজি চালাচ্ছেন।” তাঁর দাবি, মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল কর্মীর আত্মীয় পিন্টু এলাকায় দলের নাম ভাঙিয়ে মস্তানি করেন। শাসক দলের শাখা সংগঠনের পদে থাকায় পুলিশে আগে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ হয়নি। বিপ্লব-ঘনিষ্ঠ ওই তৃণমূল কর্মী রতন ঘোষ অবশ্য বলেন, “ছেলেটি যে খুব খারাপ, তেমন ঠিক নয়। কী হয়েছে, খোঁজ নিচ্ছি।”
পিন্টুকে নিয়ে মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁকে ফোন এবং ওয়টস্যাপ করে কোনও জবাব মেলেনি। জেলা তৃণমূল সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, “হাজার হাজার লোক মন্ত্রীর আশেপাশে ঘোরেন। তা হলে সকলেই কি মন্ত্রীর খাস লোক? এ সব দল বরদাস্ত করবে না। পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিক।”
দলে বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা, তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক গৌতম দাস বিষয়টি নিয়ে দলের একাংশকেই কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “পিন্টু তৃণমূলের সক্রিয় সদস্য। দলের প্রভাবশালীদের মদতে মস্তানি করে দলের বদনাম করছে।”