প্রেসিডেন্ট-মেয়র পোস্ট-তরজা
লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড পাঠালেন ট্রাম্প
লস অ্যাঞ্জেলেস, ৮ জুন: সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে আমেরিকার ন্যাশনাল গার্ডের প্রশংসায়
পঞ্চমুখ ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর মতে, যে দক্ষতার সঙ্গে ন্যাশনাল গার্ডের আধিকারিকেরা লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুপ্রবেশকারীদের বিক্ষোভ সামাল দিয়েছেন, তার নাকি তুলনা হয় না! অন্য দিকে, শহরের েডমোক্র্যাট মেয়র কারেন বাস শনিবার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে দাবি করেছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসে নাকি ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী নামেইনি। শনিবার রাতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মেয়র বাসের ‘পোস্ট যুদ্ধ’-এর তোড়ে আপাতত সরগরম লস অ্যাঞ্জেলেসের রাজনৈতিক আবহাওয়া। যদিও শেষমেশ রবিবার সকালে লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ডের একটি দল এসে পৌঁছেছে
বলে খবর।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট করে জানান, লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসন ব্যর্থ হওয়ায় তিনি ন্যাশনাল গার্ড আধিকারিকদের ময়দানে নামার
সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন। এ দিন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লিভিট সেই তত্ত্ব কার্যত মেনে নিয়েই বলেন, ‘‘লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেখানে দু’হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন।’’ তবে পরে জানা যায়, সেই নির্দেশ মেনে রবিবার সকালেই লস অ্যাঞ্জেলেসে এসে পৌঁছেছে ন্যাশনাল গার্ডের বিশেষ একটি দল।
তবে ট্রাম্প কী ভাবে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিলেন— উঠছে সেই প্রশ্নও। কারণ, সাধারণ ভাবে আমেরিকার কোনও প্রদেশে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কেবল সে প্রদেশের গভর্নর। তবে হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে আমেরিকার সংবিধানের একটি ধারাকে সামনে রেখে এমন পদক্ষেপ করেছেন ট্রাম্প, যেখানে বিশেষ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট দেশের কোনও প্রান্তে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। পাশাপাশি এ বার থেকে দেশের কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে মাস্ক পরা নিষিদ্ধ— এ কথাও সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর প্রশ্ন, ‘প্রতিবাদে শামিল মানুষগুলো নিজেদের লুকোতে চান কেন’?
গত নভেম্বরে নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ক্ষমতা এলে তিনি আমেরিকাকে অনুপ্রবেশকারী মুক্ত করবেন। ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসে প্রতিশ্রুতি রাখতে একাধিক পদক্ষেপও করছিলেন তিনি। যা নিয়ে জলঘোলা
কম হয়নি! বিষয়টি গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্তও। সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেসের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল আমেরিকার অভিবাসন এবং শুল্ক দফতর। উদ্দেশ্য, এলাকায় অবৈধ ভাবে বসবাসকারীদের চিহ্নিত করা এবং তাঁদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। সেই ঘটনার পর শনিবার শহরের পথে চলেছিল প্রতিবাদ। ফ্লেক্স-পোস্টার হাতে প্রতিবাদ চললেও, প্রথম পর্বে তা ছিল শান্তিপূর্ণই! কিন্তু হঠাৎই খবর আসে, মিনিয়াপলিস এবং সান দিয়েগোর লাতিন আমেরিকার অধিবাসীদের একাধিক এলাকায় অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।
সেই খবর পৌঁছতেই উত্তাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। সরকারি বিভিন্ন ভবনের দেওয়ালে রং করে দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রতিবাদীরা। বিভিন্ন দেওয়ালে করা হয় গ্রাফিতিও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পৌঁছয় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। প্রতিবাদীদের লক্ষ্য করে ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। জানা গিয়েছে, শনিবার মোট সাতটি জায়গা থেকে অন্তত ৪৫ জনকে আটকের পাশাপাশি প্রায় ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
সংবাদ সংস্থা