জরুরি অবস্থা নিয়ে রাহুলকে সংবিধান নিয়ে খোঁচা শাহের
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, ২৪ জুন: গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বিজেপিকে হারিয়ে সংবিধান বাঁচানোর ডাক দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। পরবর্তী সময়ে সংবিধান হাতে শপথ নিতে দেখা যায় রাহুল-সহ কংগ্রেস সাংসদদের। আজ জরুরি অবস্থার ৫০ বছর পূর্তি সংক্রান্ত আলোচনাসভায় নাম না করে রাহুলের সেই সংবিধান প্রীতিকে কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারি করে কী ভাবে সংবিধানকে কার্যত ‘হত্যা’ করেছিলেন সেই প্রসঙ্গ তুলে শাহ বলেন, ‘‘যারা আজ কথায় কথায় সংবিধানের দোহাই দেন, তাঁরা কী ভুলে গিয়েছেন যে তাঁরা কোন দলের?’’
বর্তমান যুব সমাজকে সতেচন করতে জরুরি অবস্থার ৫০ বছর পূর্তিতে দেশব্যাপী একাধিক কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। আজ দিল্লিতে এ নিয়ে একটি আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রিসার্চ ফাউন্ডেশন। আলোচনার পাশাপাশি সে সময়ে জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে যে সব রাজনৈতিক নেতারা সরকার-বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেন উদ্যোক্তরা। সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বর্তমান কংগ্রেস নেতৃত্বের সংবিধান বাঁচানোর যে উদ্যোগ তাকে কটাক্ষ করেন শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা আজ সংবিধান হাতে শপথ নিচ্ছেন, তাঁরা কোন মুখে সংবিধানের কথা বলেন? সেই সব নেতাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, তাঁরা যে দলের সাংসদ, সেই দল কংগ্রেসই ৫০ বছর আগে সংবিধানকে হত্যা করেছিল। সে সময়ে দেশে কোনও অস্থিরতা ছিল না। বহিঃশত্রুর আক্রমণও হয়নি। কেবল প্রধানমন্ত্রীর গদি চলে যাওয়ার আশঙ্কায়, ক্ষমতা ধরে রাখতে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। যার মেয়াদ ছিল ২১ মাস।’’
জরুরি অবস্থার সময়ে বর্তমানের ডিএমকে ও সমাজবাদী পার্টির অনেক নেতা জেলে ছিলেন। যার মধ্যে ছিলেন ডিএমকের এম করুণানিধি, আরজেডির লালুপ্রসাদ যাদব, এসপি-র মুলায়ম সিংহ যাদবের মতো নেতারাও। ঘটনাচক্রে, আজ ওই দলগুলি কংগ্রেসের শরিক। রাজনীতিকদের মতে, জরুরি অবস্থার সময়ে কংগ্রেস-বিরোধী রাজনীতিকদের কারান্তরালের স্মৃতিচারণ করে কংগ্রেস ও শরিকদের মধ্যে বিভেদকে উস্কে দেওয়ার কৌশল নেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘যে কংগ্রেস সেই সময়ে গণতন্ত্র ও সংবিধানকে হত্যা করেছিল, আজ সেই কংগ্রেসের পাশে বসে শরিক ডিএমকে বা এসপি গণতন্ত্র হত্যার কথা বলে কোন মুখে!’’ তাঁর প্রশ্ন, যে সব দলের নেতাদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করেছিল ইন্দিরা গান্ধী সরকার, সেই দলগুলি আজ কী ভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলায়! শাহ জানান, জরুরি অবস্থা নিয়ে লেখা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি বই আগামিকাল প্রকাশিত হবে।