ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে সাহায্য করবে আমেরিকা
ওয়াশিংটন ডিসি, ২৭ জুন: ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালানোর পাঁচ দিনের মাথায় সুর পাল্টে আমেরিকা জানাল, অসামরিক পরমাণু কর্মসূচির জন্য ইরানকে দু’হাজার কোটি ডলার অনুদান পেতে সাহায্য করবে তারা।
আমেরিকার প্রথম সারির একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইরানের উপরে বিভিন্ন আর্থিক নিষেধজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভাবনা-চিন্তা চলছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অন্দরে। পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে না-আসার জন্যই ইরানের উপরে এই সব আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ওয়াশিংটন। এখন সেগুলি তুলে নিলে তেহরানের সামনে পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আরব দেশগুলির কাছ থেকে অনুদান পাওয়ার রাস্তা খুলে যাবে। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, আমেরিকা নিজেও আরব দেশগুলিকে ইরানকে অনুদান দেওয়ার জন্য তদ্বির করতে পারে। শর্ত একটাই। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম নিয়ে কাজ করতে পারবে না তারা। অর্থাৎ, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি হতে হবে সম্পূর্ণ অসামরিক।
ট্রাম্প প্রশাসন যদি সত্যিই এই পদক্ষেপ করে, তা হলে তা ইরান-আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্কের মানচিত্রটাই পাল্টে দেবে। কাল-ই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই দাবি করেছিলেন, ইজ়রায়েল ও আমেরিকার হামলার যোগ্য জবাব দিয়েছে ইরান। আমেরিকার গালে সপাটে চড় কষিয়েছে তারা। খামেনেইয়ের সেই ‘বিজয় ভাষণ’-এর পরে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা আশঙ্কা করছিলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো ফের কোনও আগ্রাসী আচরণ করে বসবেন। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টো হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তাঁরা। আশা বাড়ছে, এ বার তা হলে তেহরানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি আলোচনার পথেও হাঁটতে
পারে ওয়াশিংটন।
খামেনেই গতকাল দাবি করেন, আমেরিকার হামলায় তিনটি পরমাণু কেন্দ্রের বিশেষ কোনও ক্ষতি হয়নি। আমেরিকার বোমা ইরানের হাতে থাকা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের ভান্ডার আদৌ ধ্বংস করতে পেরেছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছিল আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-ও। কিন্তু আজ আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব তথা পেন্টাগন কর্তা পিট হেগসেথ দাবি করেন, খামেনেই বা আইএইএ-র দাবির কোনও যুক্তি নেই। কারণ আমেরিকার হামলায় সত্যিই ইরানের পরমাণু কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। পেন্টাগনে এক সাংবাদিক বৈঠকে হেগসেথ ভিডিয়ো দেখিয়ে দাবি করেন, ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্রই ‘সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন’ হয়ে গিয়েছে। তাঁর মন্তব্য, “এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে অসাধ্যসাধন করেছেন, তা অন্য প্রেসিডেন্টের পক্ষে করা সম্ভব ছিল না।” সংবাদ সংস্থা