উত্তরপ্রদেশে দলে জাতকে গুরুত্ব রাহুলের
প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি, ২৭ জুন: উত্তরপ্রদেশের আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাহুল গান্ধী জাতপাতের সমীকরণ মেনে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে রদবদল করতে চাইছেন। উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এখন বারাণসীর নেতা অজয় রাই। তিনি উচ্চবর্ণের ভূমিহার সম্প্রদায়ের নেতা। সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটিতে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে রয়েছেন ব্রাহ্মণ নেতা অবিনাশ পাণ্ডে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এই দুই পদেই ২০২৭-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রদবদল করা হতে পারে। সম্প্রতি রাহুল গান্ধী স্যাঁকরা, ছুতোর, মুচি, কামারের মতো পেশার মানুষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যাঁদের অধিকাংশই ওবিসি সম্প্রদায়ের। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে রাহুল বলেছেন, ‘‘আমার লক্ষ্য হল কংগ্রেস পার্টির লাগাম দলিত, ওবিসি, আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের হাতে তুলে দেব।’’ এই ভাবনার প্রতিফলন উত্তরপ্রদেশে দেখা যাবে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।
উত্তরপ্রদেশে অজয় রাইয়ের নেতৃত্বে গত লোকসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস ছ’টি আসন জিতেছিল। খোদ অজয় রাই বারাণসীতে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে তাঁকে কঠিন লড়াইয়ের মুখে ফেলেছিলেন। সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের আগে উত্তরপ্রদেশের জাতপাতের সমীকরণ মাথায় রেখে প্রদেশ সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত নেতা ঠিক করতে হবে। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৭-এ উত্তরপ্রদেশে ইন্ডিয়া মঞ্চের ঐক্য অটুট থাকবে। অখিলেশ অনগ্রসর, দলিত, সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ককে পাখির চোখ করছেন। কংগ্রেসও জাতপাতের সমীকরণ মাথায় রেখে এগোতে চাইছে।
গত বছর ডিসেম্বরে উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি কংগ্রেস রাজ্যের ৭৫টি জেলায় শহর ও জেলা সভাপতি নিয়োগ করেছে। তার মধ্যে ৫০টি পদই উচ্চবর্ণের নেতাদের হাতে। যাঁদের মধ্যে ব্রাহ্মণের
সংখ্যা বেশি। ১৮টি পদে তফসিলি জাতি, ৩৪টি ওবিসি ও ৩১টি পদে ওবিসি নেতা রয়েছেন। আদিবাসী নেতাদের হাতে মাত্র একটি পদ রয়েছে। রাহুল গান্ধী জাতগণনার কথা বলে যার জনসংখ্যায় যত ভাগ, ততখানি প্রতিনিধিত্বের দাবি তুলেছেন। কিন্তু কংগ্রেসের সংগঠনেই দলিত, ওবিসি নেতারা যথেষ্ট প্রতিনিধিত্ব পাননি বলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। শীর্ষ স্তরে রদবদল হলে সেই ক্ষোভ নিরসন করা যাবে, ধারণা কংগ্রেস নেতৃত্বের।