সমস্যা রুশ তেল, লক্ষ্য বাণিজ্য চুক্তি
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, ১৭ অক্টোবর: আমেরিকার সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনার পরে ভারতের তেল সংস্থাগুলি মস্কো থেকে তেল আমদানি ৫০% কমিয়েছে—বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউসের এক কর্তা সংবাদমাধ্যমের কাছে এই দাবি করেন। তবে তা উড়িয়ে ভারতের সরকারি সূত্রের পাল্টা বার্তা, এখনও কাটছাঁটের বিষয়টি বাস্তবায়িত হয়নি। ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে আমদানির হিসেব এলে তফাৎ বোঝা যাবে।
সূত্রের খবর, নভেম্বরে নয়াদিল্লি রাশিয়া থেকে আমদানির যে বরাত দিয়েছিল তেল সংস্থাগুলিকে, তা এখনও পর্যন্ত অপরিবর্তিত। ডিসেম্বরে বেশ কিছু তেলবাহী জাহাজ রাশিয়া থেকে এ দেশে আসবে। সূত্র এটাও বলছে, কেন্দ্র এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে মস্কো থেকে তেল আমদানির প্রশ্নে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।
রুশ তেল কেনা বন্ধ করতে দীর্ঘ দিন ধরে ভারতকে চাপ দিচ্ছে হোয়াইট হাউস। ইউক্রেন যুদ্ধে ক্রেমলিনকে চাপে রাখতে ট্রাম্প সরকারের পরিকল্পনার অংশ এটি। তারা বিষয়টিকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির কৌশল হিসেবেও ব্যবহার করছে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে নাকি ফোনে আশ্বাস দিয়েছেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবেন। এমন কোনও ফোনালাপের কথা অস্বীকার করেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তবে কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, তেল কেনা নিয়ে আমেরিকার দাবিকে জোরালো ভাবে উড়িয়ে দেয়নি ভারত। বরং সূত্রের খবর, ট্রাম্পকে তুষ্ট করতে, তাঁর বসানো চড়া শুল্কের ধাক্কা এড়াতে এবং তাঁদের বাণিজ্য চুক্তিতে রাজি করাতে সে দেশ থেকে বাড়তি তেল-গ্যাস কিনতে চলেছে ভারত। তবে দামের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
বাণিজ্য সচিব রাজেশ আগরওয়াল প্রতিনিধি দল নিয়ে ওয়াশংটিনে পৌঁছে ভারত-আমেরিকার বাণিজ্য চুক্তি কথা শুরু করেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রের দাবি, এটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক নয়, তার ভিত তৈরির। সূত্রের দাবি, আমেরিকার দুগ্ধ বা কৃষিজাত পণ্যের জন্য ভারতের বাজার খোলার যে দাবি নিয়ে কথা আটকে, তাতে নরম হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে আমেরিকা থেকে আরও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং যুদ্ধাস্ত্র কেনার ব্যাপারে নয়াদিল্লিকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। বাণিজ্য চুক্তি ইতিবাচক জায়গায় না পৌঁছানো পর্যন্ত থমকে মোদীর ২৬ তারিখ মালয়েশিয়ায় আসিয়ান শীর্ষ বৈঠকে যাওয়ার বিষয়টিও। সেখানে ট্রাম্প যাবেন। মোদী গেলে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে পারে। কিন্তু ট্রাম্প কখন কী বলেন তা পূর্ব নির্ধারিত নয়, যা মোদীকে ঘরোয়া রাজনীতিতে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। ভারত-আমেরিকা চুক্তি ভেস্তে গেলে সেখানে দ্বিপাক্ষিক পার্শ্ববৈঠকও অর্থহীন হবে। তাই মোদীর যাওয়া নিয়ে চুপ বিদেশ মন্ত্রক।