প্রশাসনিক রদবদল
ভাস্কর। হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য বদলি হয়েছেন শিল্প দফতরের সচিব পদে। সেই জেলায় পাঠানো হয়েছে খুরশিদ আলি কাদরিকে। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণকে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক করা হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক হয়েছেন বালসুব্রহ্মণ্যম টি। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক হয়েছেন কুহুক ভূষণ।
প্রশাসনের অন্দরের বক্তব্য, এঁদের মধ্যে অন্তত চার জন সচিব পদে পৌঁছে গিয়েও জেলা শাসকের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বাদে এমন প্রত্যেককেই এ বার বদল করেছে রাজ্য। ২০১৪ এবং ২০১৫ ব্যাচের অফিসারেরাও জেলাশাসক হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। তাঁদের অনেককে জেলাশাসক করেছে নবান্ন। সংশ্লিষ্ট মহল আরও জানাচ্ছে, এক বছরেরও বেশি সময়ের অপেক্ষার পরে ২০২২ ব্যাচের আইএএস অফিসারেরাও এ বার পেলেন এসডিও
(মহকুমা শাসক) পদ।
এ ছাড়া ২২ জন এডিএমের রদবদল করেছে নবান্ন। এসডিও থেকে এডিএম বা অন্য পদে রদবদল হয়েছে আরও ১৫ জনের। ২০২২ ব্যাচের ১০ জন অফিসারকে বিভিন্ন জেলার মহকুমা শাসক পদে বদলি করা হয়েছে। গত প্রায় এক বছর ধরে তাঁরা বিভিন্ন দফতরে ওএসডি হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এ ছাড়াও ডিএম-ডিসি, বিডিও সহ মোট ডব্লিউবিসিএস এগ্জ়িকিউটিভ অফিসার বদলি হয়েছেন ৪৬০ জন। মোট ৬৭ জন
আইএএস বদলি হয়েছেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই পুলিশ স্তরেও কিছু রদবদল হয়েছে। বাকি
রদবদলও হবে শীঘ্রই।
প্রসঙ্গত, জ্ঞানেশ কুমার এ দিন জানান, ৪ নভেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্যে এসআইআর-এর এনুমারেশন ফর্ম দেওয়ার কাজ শুরু হবে। সে দিন থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে এসআইআর-এর মূল কাজ চালু হবে। ফলে বদলির আওতায় থাকা আধিকারিকদের উপর পড়বে
বাড়তি দায়িত্বও।
আমলা রদলবদলকে বাতিল করার দাবি তুলে নির্বাচন কমিশনে দরবার করেছে বিজেপি। দলের তরফে শিশির বাজোরিয়া সোমবার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি লিখে বলেছেন, ‘বিহারে এসআইআর-এর আগে কমিশন ২৪ জুন যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, তা গোটা দেশে প্রযোজ্য। ফলে, সেই বিজ্ঞপ্তির পরে যাঁরা বদলি হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই ঘোষিত এসআইআর প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বা যুক্ত থাকবেন। তাই কমিশনের অনুমতি ছাড়া এই বদলি কমিশনের নির্দেশিকার সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।’ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “ওই আধিকারিকেরা তৃণমূল কংগ্রেসের দলদাস হয়ে কাজ করলে, গণতান্ত্রিক ভাবে আটকাব।” তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার পাল্টা বলেছেন, “বিজেপির এই অবান্তর কথার উত্তর নির্বাচন কমিশনই দিয়েছে। রাজ্যের নির্বাচিত সরকার প্রশাসনিক স্বার্থে নিয়মের মধ্যে যে রদবদল করেছে তা নিয়ে কারও কাছে জবাবদিহির প্রয়োজন কী?” সিপিএমের নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এসআইআর ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে এই বদলি। তৃণমূল-বিজেপির কে কোথায় কী ভাবে চলবে, তার অভ্যন্তরীণ রসায়নের অংশ কি না এই বদলি, সেটাই প্রশ্ন।”