ঘরের দরজা খুলতেই গ্যাস লিক থেকে আগুন বস্তিতে, আহত ছয়
নিজস্ব সংবাদদাতা
গ্যাস সিলিন্ডার লিক করায় আগুন লেগে জখম হলেন বেশ কয়েক জন। বেলতলা মোটর ভেহিক্লস দফতরের অদূরে, পেয়ারাবাগান বস্তিতে সোমবার দুপুরে আগুন লাগে। ওই দুর্ঘটনায় মোট ছ’জন জখম হয়েছেন বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। তাঁদের মধ্যে সুবর্ণা চক্রবর্তী এবং শকুন্তলা জানা নামে দু’জনকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সুবর্ণার দেহের ৫০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তাঁকে বার্ন ইউনিটে এবং শকুন্তলার দেহের ২০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তাঁকে ইমার্জেন্সি অবজ়ারভেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাঁকে দেখছেন।
বস্তির বাসিন্দারা জানান, একটি বন্ধ ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার লিক করছিল। গ্যাসের গন্ধ পেয়ে তাঁদেরই কেউ এক জন ঘরের দরজা খুলে দেন। দরজা খোলামাত্রই এক প্রকার বিস্ফোরণ ঘটে আগুন ধরে যায়। আগুনের হলকায় ওই ঘরের আশপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা অনেকেই জখম হন।
এ দিন দুপুরে ওই বস্তিতে পৌঁছে দেখা যায়, এক দিকে ছটের প্রস্তুতি চলছে। অন্য দিকে, খুপরি খুপরি ঘরের সামনে উদ্বিগ্ন মুখে দাঁড়িয়ে আছেন লোকজন। তাঁরা জানান, কোনও মতে আরও বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। কারণ, বস্তির সব ঘরেই গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ। আগুন লাগতে দেখে বস্তির বাসিন্দারাই সংশ্লিষ্ট ঘরে জল ছুড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করেন। পরে দমকলের একটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভায়। এক মহিলা দোতলা থেকে ঝাঁপ দেন।
যে ঘরে বিস্ফোরণ ঘটে, সেটিরই উল্টো দিকের ঘরের বাসিন্দা রঘু মণ্ডল। অপরিসর ঘরের মধ্যে হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে শুয়ে ছিলেন তিনি। অতি কষ্টে বলেন, ‘‘বাচ্চাদের স্নান করতে পাঠিয়ে দিয়ে আমিও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ইতিমধ্যেই আগুনের গোলা ছুটে এল। আমি ছিটকে পড়ি। সারা শরীরে তখন জ্বলুনি।’’ আর এক জখম বাসিন্দা রাজু মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমি মায়ের সঙ্গে কথা বলছিলাম। আচমকাই একটা শব্দ। তার পরেই শরীর জ্বলতে শুরু করল।’’ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়়ে দেওয়া হলেও জ্বলুনি কমেনি। এ দিন কাতরাতে দেখা যায় রাজুকে।
গ্যাস লিক করার পরে কী ভাবে তাতে আগুন লেগে গেল, তা বুঝতে পারছেন না বস্তিবাসীরা। দমকল জানিয়েছে, কী ভাবে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অসহায়: পেয়ারাবাগান বস্তির আগুনে এক আহত। সোমবার। নিজস্ব চিত্র