কাশ্মীর-তাস পাকিস্তানের,
উঠল পুলওয়ামাও
নয়াদিল্লি, ১১ মে: সংঘর্ষবিরতির পরে আগামিকাল বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও-রা। তার আগে কাশ্মীরকেই তুরুপের তাস করার চেষ্টা শুরু করল ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের তরফে এক বিবৃতিতে আজ বলা হয়েছে, ‘কাশ্মীরিরা যেন নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার পায়’। এই আবহে আজ পাকিস্তানের তরফে কার্যত স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, পুলওয়ামা-হামলায় তাদের জড়িত থাকার কথা। এক সাংবাদিক বৈঠকে ওই ঘটনাকে পাক সেনাবাহিনীর ‘কৌশলগত দক্ষতা’ বলে দাবি করে বসেন সে দেশের বায়ুসেনার এয়ার ভাইস মার্শাল ঔরঙ্গজ়েব আহমেদ।
সংঘাত বন্ধের পরে আগামিকাল বেলা ১২টায় যুযুধান দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ডিজিএমও-রা কথা বলবেন। তার আগের দিন আজ পাক বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘জম্মু-কাশ্মীরের সমস্যার যে কোনও ন্যায্য এবং স্থায়ী নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অবশ্যই কাশ্মীরিদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারকে সুনিশ্চিত করতে হবে’। ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিকে স্বাগত জানিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে পোস্ট করেছিলেন, তাতে তিনি কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, আমেরিকার প্রেসিডন্টের ওই মন্তব্যের পরে পাকিস্তানও কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাল। ট্রাম্পের ওই বিবৃতিকেও স্বাগত জানিয়েছে ইসলামাবাদ। শান্তি ফেরানোর জন্য আমেরিকার যে কোনও উদ্যোগকে তারা সমর্থন করবে বলে জানিয়েছে। পাক বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে সংঘর্ষবিরতির জন্য আমেরিকা এবং অন্য ‘বন্ধু রাষ্ট্র’গুলির গঠনমূলক ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে ইসলামাবাদের দাবি, উত্তেজনা প্রশমন এবং আঞ্চলিক স্থিতাবস্থার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আগামিকালের বৈঠকে পাকিস্তান কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে ধরতে পারে। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ জানিয়েছেন, মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন পাক প্রতিনিধিরা। সেখানে সিন্ধু জলচুক্তি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রসঙ্গের পাশাপাশি, কাশ্মীর সমস্যা নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি পাক মন্ত্রীর। সূত্রের খবর, সংঘর্ষবিরতির পরেও কেন তা পাকিস্তানের তরফে লঙ্ঘন করা হল তা ডিজিএমও পর্যায়ের আলোচনায় তুলবে ভারত।
ভারত-পাক তপ্ত দ্বিপাক্ষিক আবহে আজ আচমকাই পুলওয়ামা প্রসঙ্গ তুলে বসেছেন পাকিস্তান বায়ুসেনার এয়ার ভাইস মার্শাল ঔরঙ্গজ়েব আহমেদ। আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘পুলওয়ামায় আমরা ওদের আমাদের কৌশলগত দক্ষতা সম্পর্কে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি… পাকিস্তানের আকাশসীমা, জলসীমা, ভূখণ্ড বা মানুষ যদি বিপন্ন হয় তা হলে কোনও সমঝোতা করা হবে না। এই ধরনের ঘটনা উপেক্ষা করা যায় না। এ ব্যাপারে আমরা দেশের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’ এখানেই থামেননি পাক বায়ুসেনার ওই শীর্ষ অফিসার। তাঁর সংযোজন,‘‘পাকিস্তানি জনগণের সশস্ত্র বাহিনীর উপর যে গর্ব এবং আস্থা রয়েছে তা যে কোনও মূল্যে আমরা সর্বদা বজায় রাখি। পুলওয়ামায় আমাদের কৌশলগত দক্ষতার মাধ্যমে আমরা তা বোঝাতে চেষ্টা করেছি; এখন, আমরা আমাদের অপারেশনাল অগ্রগতি এবং কৌশলগত দক্ষতা প্রদর্শন করেছি।’’
২০১৯ সালে পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয়ে জঙ্গি নাশকতায় ৪০ জন জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পুলওয়ামা নাশকতার সঙ্গে পাক যোগ অস্বীকার করেছিলেন। সংবাদ সংস্থা