পাঁচ রাত পরে ঘরে ফিরলেন গ্রামবাসীরা
সাবির ইবন ইউসুফ
শ্রীনগর, ১১ মে: ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করার পরে শনিবার রাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকা শান্তিপূর্ণ ছিল। অপারেশন সিঁদুরের পরে পাকিস্তানি হামলায় এই এলাকায় ২৫ জন নিহত ও ৪০ জনেরও বেশি জখম হয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধে থেকে নাগাড়ে শেলিং হয়েছে জম্মুর উধমপুরে। সেই এলাকা শনিবার শান্ত ছিল। কাশ্মীর ও পঞ্জাবের নানা প্রান্ত থেকে সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পাকিস্তানি হামলার খবর এলেও উধমপুরে সে রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবু এখানকার বাসিন্দাদের ভয় কাটেনি। কোনও সরকারি ঘোষণা বা নির্দেশিকা না থাকলেও অনেক বাসিন্দাই বাড়ির সব আলো নিভিয়ে রেখে স্বেচ্ছায় ব্ল্যাকআউট করে রেখেছিলেন।
২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২৬ জন ভারতীয়। তার ঠিক দু’সপ্তাহ পরে পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি আক্রমণ করে ভারত। সেই অপারেশন সিঁদুর শুরু হওয়ার পরে পাকিস্তানি হামলায় সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জম্মু ডিভিশন। নিহত হয়েছেন ২২ জন, যাঁদের মধ্যে সেনাবাহিনীর ৫ জন রয়েছেন।
কাশ্মীরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গ্রামগুলি থেকে পালিয়েছিলেন বাসিন্দারা। সংঘর্ষবিরতির পরে উরি (বারামুলা), তাংধার, নওগাম (কুপওয়ারা) ও গুরেজ়ের (বান্দিপোরা) গ্রামগুলিতে বাসিন্দারা ধীরে ধীরে ফিরে আসতে শুরু করেছেন। এলাকার বাসিন্দাদের থেকে জানা গিয়েছে যে, শনিবার সন্ধে থেকে সেখানে আর কোনও পাকিস্তানি হামলা হয়নি।
উরির গারকোট গ্রামের বাসিন্দা মুশতাক আহমেদের কথায়, “গত কাল রাতেই গ্রামে ফিরে এসেছি আমরা। তার পর থেকে এলাকা শান্তই আছে।” গুরেজ়ের বাসিন্দারাও বলেন, “নিয়ন্ত্রণরেখার কোন দিক থেকেই আর গোলাগুলি চলেনি। তবে অনেকেই বাড়ি না ফিরে বাঙ্কারে রাত কাটিয়েছেন। তবে সবাই মোটামুটি শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছেন।” একই কথা জানিয়েছেন তাংধারের বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকেই পাঁচ রাত পরে বাড়ি ফিরলেন।
তবে শনিবার সংঘর্ষবিরতির পরে শনিবারও শান্তি ফেরেনি শ্রীনগরে। শনিবার সন্ধেবেলা জোরদার বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান শহরবাসী। তার পরেই ব্ল্যাকআউট হয়ে যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়ায়।