৪৯৮এ ধারা: ফের তোপ আদালতের
নয়াদিল্লি, ১৬ মে: বৈবাহিক সম্পর্ক সংক্রান্ত মামলায় স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুরতার বিরোধী ৪৯৮এ ধারা ও পণ-বিরোধী আইনের অপব্যবহার নিয়ে ফের সরব হল সুপ্রিম কোর্ট। ২৬ বছরের পুরনো একটি নিষ্ঠুরতার মামলায় দোষী সাব্যস্ত স্বামীকে মুক্তি দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
১৯৯৯ সালে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা রাজেশ চাড্ডা নামে এক ব্যক্তির স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারা ও পণ-বিরোধী আইনে মামলা করেন। তিনি দাবি করেন, স্বামী তাঁকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেছেন। মারধর করার ফলে তাঁর গর্ভপাতও হয়েছে।
নিম্ন আদালতে স্বামী দোষী সাব্যস্ত হন। কারাদণ্ড হয় তাঁর। ইলাহাবাদ হাই কোর্টও সেই রায় বজায় রাখে। এর পরে সুপ্রিম কোর্টে আপিল
করেন তিনি।
চলতি মাসে রাজেশকে মুক্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চ জানিয়েছে, স্ত্রীর তরফে শারীরিক নির্যাতন বা মারধরের ফলে গর্ভপাতের পক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ দেওয়া হয়নি। বিচারপতিদের মতে, ফৌজদারি আইনে সংশয়ের ঊর্ধ্বে উঠে অভিযোগ প্রমাণ করা প্রয়োজন। এমন ভাসা ভাসা, প্রমাণহীন অভিযোগ মহিলাদের রক্ষার জন্য তৈরি আইনের উদ্দেশ্যই নষ্ট করে দেয়।
বেঞ্চ জানিয়েছে, কেবল মানসিক যন্ত্রণা হলেই কাউকে ৪৯৮এ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। বিচারপতিদের মতে, ‘‘যে ভাবে অভিযোগকারী স্ত্রীরা এই ধারা ও পণ-বিরোধী আইনের অপব্যবহার করছেন তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। স্বামীর বয়স্ক অভিভাবক, দূরসম্পর্কের আত্মীয়, বিবাহিত বোন (যাঁরা অন্যত্র বাস করেন) তাঁদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করা হচ্ছে। স্বামীর সব আত্মীয়কে জড়ানোর এই ধারা ক্রমেই স্ত্রীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করছে।’’
গত কয়েক বছরে ৪৯৮এ ধারা ও পণ-বিরোধী আইনের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে একাধিক বার সরব হয়েছে শীর্ষ আদালত।
আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতার বক্তব্য, ‘‘৪৯৮এ ধারার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আমরা দীর্ঘদিন লড়াই করছি। সুপ্রিম কোর্টও সাম্প্রতিক সময়ে এই ধারার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে একাধিক রায় দিয়েছে। ফলে আশার আলো দেখা যাচ্ছে।’’
সংবাদ সংস্থা