ভারতের বিরুদ্ধে কোর্টে তুর্কি সংস্থা
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, ১৬ মে: ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতে শত্রু শিবিরকে সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করার পরে তুরস্কের বিরুদ্ধে গোটা দেশ জুড়ে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ আর ক্ষোভের হাওয়া। অন্য দিকে গত কাল ভারত সরকার চুক্তি বাতিল করতেই আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে তুরস্কের বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনা সংস্থা সেলেবি। ভারতের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলিতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে ছিল সংস্থাটি। সেলেবির তরফে শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেখানে তারা দাবি করে কোনও নোটিস ছাড়াই তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে নয়াদিল্লি। জাতীয় সুরক্ষার নামে ভাসা ভাসা যুক্তি দেখানো হয়েছে। তাদের আরও যুক্তি, হঠাৎ এ ভাবে চুক্তি বাতিল করলে ৩৭৯১ জন কর্মী চাকরি হারাবেন। পাশাপাশি তাদের সংস্থায় বিনিয়োগকারীদের মনোবলের উপর প্রভাব পড়বে।
অন্য দিকে নয়াদিল্লির বক্তব্য, ভারতের যাবতীয় সাহায্যের কথা ভুলে গিয়ে যুদ্ধের আবহে পাকিস্তানকে ড্রোন দিয়ে সাহায্য করেছে তুরস্ক সরকার। পাকিস্তানে সেনা পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এর পরেই তুরস্কের সংস্থা সেলেবির সঙ্গে যাবতীয় চুক্তি বাতিল করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ানের নেতৃত্বাধীন তুরস্কের সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরেই সম্পর্কে অধোগতি চলছে ভারতের। কাশ্মীর নিয়ে সরাসরি তিনি পাকিস্তানের পাশে থেকেছেন। ২০২২ সালে, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের বক্তৃতায় পাকিস্তানের পক্ষে কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, কাশ্মীরে সুষ্ঠু, স্থায়ী শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ ভারত। আদর্শগতভাবেও তুরস্ক যে পাকিস্তানের সহমর্মী, সে কথাও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বারবার করে বলেছেন সেই দেশের কর্তারা। শুধু বলাই নয়। পাকিস্তানের অস্ত্রভাণ্ডার গড়তে তুরস্ক যে প্রত্যক্ষ ভূমিকা নিয়েছে তা সাম্প্রতিক
সংঘাতে প্রমাণিত।
অন্য দিকে কাশ্মীর নিয়ে তুরস্কের অবস্থানের প্রতিক্রিয়ায়, প্রধানমন্ত্রী মোদী আর্মেনিয়া, সাইপ্রাস এবং গ্রিসের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে সম্পর্ক গভীর করার চেষ্টা করেছেন। উল্লেখ্য এই তিনটি দেশের সঙ্গে তুরস্কের বিরোধ রয়েছে। উত্তর সাইপ্রাসে অবৈধ দখলদারি নিয়ে গ্রিসের সঙ্গে প্রবল বিরোধিতা তুরস্কের। ভারত সরাসরি গ্রিসের পাশেই থেকেছে। প্রস্তাবিত ভারত পশ্চিম এশিয়া ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডরে তুরস্ককে বাদ দেওয়া হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। তাতে প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে তুরস্ক।