জলসীমান্তে নজরদারি,
ফাঁড়ি বৃদ্ধির তৎপরতা
শিবাজী দে সরকার
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে গত কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল এবং জল সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে এ বার সুন্দরবনে ফাঁড়ি বা আউটপোস্টের সংখ্যা বাড়াতে চাইছে বিএসএফ। সূত্রের খবর, এর মধ্যে ভাসমান ফাঁড়ির সংখ্যাই বেশি হবে। মূলত অনুপ্রবেশ ঠেকাতেই এই পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা এই কেন্দ্রীয় বাহিনী।
সূত্রের খবর, ওই ফাঁড়ির জায়গার জন্য ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যা নিয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের মধ্য উচ্চপর্যায়ে কথাও হয়েছে। কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে রাজ্য রাজি হয়েছে বলেও খবর। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে পালাবদলের পর গত কয়েক মাসে বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় ফাঁড়ি তৈরির জন্য
বিএসএফকে জমিদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে বিএসএফ সুন্দরবন ঘেরা ভারত-বাংলাদেশ জল সীমান্তে সাতটি নতুন সীমান্ত ফাঁড়ি বা বর্ডার আউটপোস্ট করতে চাইছে। এই নতুন ফাঁড়িগুলি হলে বর্তমানে সুন্দরবনে একটি ফাঁড়ি থেকে আরেকটি ফাঁড়ির যা দূরত্ব তা আরও কমবে এবং তার ফলে নজরদারি আরও জোরালো হবে।
প্রসঙ্গত, এ রাজ্যের প্রায় ১৫৭ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উপকূলীয় এলাকা রয়েছে। যার মধ্যে সুন্দরবনের বিভিন্ন জলবেষ্টিত এলাকাও আছে। রাজ্যের পাঁচটি পুলিশ জেলার ১৪টি উপকূল থানা থাকলেও সুন্দরবন জলবেষ্টিত সীমান্তের ওই সব এলাকার নিরাপত্তার দেখভাল করে থাকে বিএসএফ। তারাই বাংলাদেশের জাহাজ কিংবা নৌকার ওপর নজরদারি চালায়। এমনকি, জলপথ ব্যবহার করে যাতে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে তাও দেখে বিএসএফ। গোয়েন্দা
সূত্রের বক্তব্য, বাংলাদেশে পালাবদল ভারতের সঙ্গে সে দেশের কূটনৈতিক শক্তির উপরে প্রভাব ফেলেছে। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন ভারতবিরোধী সংগঠন মাথাচাড়া দিয়েছে। তাই সীমান্তসুরক্ষা আগের থেকে আরও স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বেড়েছে জঙ্গি
অনুপ্রবেশের আশঙ্কাও।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে স্থলপথের বদলে জলপথ জঙ্গিদের কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য হতে পারে। জঙ্গলঘেরা সুন্দরবন তাই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পর থেকেই জলপথে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিশেষ তৎপর হয়েছে দেশের সরকার। সুন্দরবনে বিএসএফের ফাঁড়ি বৃদ্ধির উদ্যোগও সেই বৃহত্তর পরিকল্পনারই অঙ্গ।