সরকারি সাহায্য না পেলে দেউলিয়া আদালতে
পরিষেবা বন্ধের হুঁশিয়ারি ভোডাফোন আইডিয়ার
নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাড়ে বকেয়ার বোঝা। হাতে নগদের অভাব। বহু দিন ধরেই খুঁড়িয়ে চলছে ভোডাফোন আইডিয়া (ভি)। পরিষেবা বন্ধ হবে কি না, সেই প্রশ্ন আগেও তুলেছেন উদ্বিগ্ন গ্রাহক। এ বার হুঁশিয়ারি এল সংস্থার তরফেই। শুক্রবার ভি-এর তরফে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হল, কেন্দ্রের সাহায্য না পেলে
অদূর ভবিষ্যতে আর পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। সংস্থা সূত্রের দাবি, সাহায্য বলতে স্পেকট্রাম বাবদ বকেয়া, জরিমানা, সুদ সমেত মোট যে টাকা বকেয়া রয়েছে, তা মকুবের কথা বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই যার একাংশ মকুব করেওছে কেন্দ্র। সংস্থাটির বার্তা, বোঝা না কমলে ২০২৬-এর মার্চের পরে দেউলিয়া ঘোষণা করে ঝাঁপ ফেলা ছাড়া অন্য পথ খোলা থাকবে না।
ঋণের ভারে জর্জরিত ভি-র থেকে মূলত স্পেকট্রাম খাতে সরকারের প্রাপ্য ছিল প্রায় ১.৯৫ লক্ষ কোটি টাকা। সম্প্রতি ৩৭,০০০ কোটি মতো মকুব করে সংস্থার ৪৯% অংশীদারি নিয়েছে কেন্দ্র। আরও ৩০,০০০ কোটি মকুবের আর্জিও জানিয়েছে ভি। তবে তাদের বার্তা, তার পরেও যা পরিস্থিতি দাঁড়াবে, তাতে আগামী মার্চের পরে দেউলিয়া আদালতে (এনসিএলটি) গিয়ে সংস্থাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা ছাড়া উপায় নেই। সে ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বেন প্রায় ২০ কোটি গ্রাহক। প্রশ্ন উঠছে, তাঁরা কোথায় যাবেন? এমনকি বর্তমান পরিষেবা সংস্থা ঠিক মতো দিতে পারবে কি না, দানা বাঁধছে সন্দেহ। কারণ ভি জানিয়েছে, প্রযুক্তিগত উন্নতি ও দৈনন্দিন খরচ সামলানো কার্যত কঠিন হচ্ছে। এই খরচ জোগাড়ের টাকাও তাদের হাতে নেই। এর আগে মালিকপক্ষ ২৬,০০০ কোটি টাকা মূলধন জুগিয়েছে, মিলেছে সরকারি বকেয়া মকুবের সুবিধা। কিন্তু ব্যাঙ্ক সাহায্য করেনি। তাই সরকারের তরফে বকেয়া মাফের পাশাপাশি ব্যাঙ্ক-কে সাহায্যের নির্দেশও চায় তারা। তবেই ভি-কে বাঁচানো যেতে পারে, দাবি সূত্রের। না হলে একমাত্র বিকল্প এনসিএলটি-তে যাওয়া। সেই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি। তখন গ্রাহকদের কী হবে, প্রশ্ন তুলেছে ভি নিজেই। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, সরকারকে হাত ধরার বার্তা দিতে মরিয়া সংস্থা। যে কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং গ্রাহকদের সমস্যায় পড়ার কথা তোলা হচ্ছে সংস্থার তরফেই।
নিজেদের ‘অন্ধকার’ ভবিষ্যতের সঙ্গে দেশের ডিজিটাল অগ্রগতিকেও জুড়ে দিয়েছে সংস্থা। বলেছে, তারা বন্ধ হলে টেলিকম সংস্থা কমে হবে তিন। ফলে প্রতিযোগিতা কমবে। ধাক্কা খাবে দেশের ডিজিটাল নির্ভর হওয়ার উদ্যোগ। এর আগে কেন্দ্র বলেছিল, সরকার ব্যবসা করবে না। ভি-কে বাঁচাতে অংশীদারি হাতে নিয়েছে মাত্র। ধীরে ধীরে ছেড়ে দেবে। কিন্তু জল্পনা, ছবিটা বদলাতে পারে এ বার। পরিসংখ্যান বলছে, গত জুলাই-মার্চে ১.২৫ কোটির বেশি গ্রাহক হারিয়েছে ভি। শুক্রবার সংস্থার শেয়ার দর নেমে গিয়েছে ৭.৩৭ টাকায়।