অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে কি ভাঙতে চলেছে অধ্যক্ষ পরিষদ?
নিজস্ব সংবাদদাতা
নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদে ভাঙনের সুর। এক পক্ষ শুক্রবার ৩৩তম রাজ্য সম্মেলন করে নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা করেছে। অপর পক্ষ আগামী ২৫ মে রাজ্যে সম্মেলন করতে চলেছে। তবে তারা একে অপরের অস্তিত্ব অগ্রাহ্য করছে। শুক্রবার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে রাজ্য সম্মেলন ডাকে এক পক্ষ। যার অন্যতম উদ্যোক্তা এই সংগঠনের রাজ্য কমিটির বিদায়ী সভাপতি পূর্ণচন্দ্র মাইতি। যিনি মাস কয়েক আগে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ থেকে অবসর নিয়েছেন। এ দিন এই সম্মেলনে দূরের কলেজের অধ্যক্ষেরা অনলাইনে যোগ দিয়েছিলেন বলে পূর্ণচন্দ্রের দাবি। তিনি জানান, সম্মেলনে নতুন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, অফিস সেক্রেটারি নিয়ে তৈরি হয়েছে রাজ্য কমিটি। তাঁর দাবি, সম্মেলন নিয়ম অনুযায়ীই হয়েছে।
কিন্তু গোটা বিষয়টি ফুৎকারে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন আগামী ২৫ মে হতে চলা অধ্যক্ষ পরিষদের রাজ্য সম্মেলনের মূল উদ্যোক্তা মানস কবি। আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ এবং অধ্যক্ষ পরিষদের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মানসের বক্তব্য, পরিষদের বিদায়ী সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, দু’জনেই এখন অবসরপ্রাপ্ত। তাঁদের ডাকা রাজ্য সম্মেলন সম্পূর্ণ বেআইনি। নিয়ম অনুযায়ী, আগে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পরিষদের ইউনিটের কার্যনির্বাহীদের নির্বাচন করতে হয়। সেই কার্যনির্বাহীরা পরবর্তী ক্ষেত্রে রাজ্য কমিটির সদস্যদের মনোনীত করেন। যদি মনোনয়ন না হয়, তা হলে নির্বাচনে যেতে হয়। নিয়ম রয়েছে, রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি হন রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকেরা হন রাজ্য কমিটির সহ-সম্পাদক। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম মানা হয়নি বলে মানসের দাবি। তিনি আরও জানান, বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ৪৫০টি কলেজের মধ্যে ২৯৬টিতে অধ্যক্ষ রয়েছেন। ২৫ মে-র সম্মেলনে আসার জন্য তাঁদের মধ্যে ২৪১ জন ইতিমধ্যেই সম্মতি দিয়েছেন। ওই সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীও আমন্ত্রিত। মানস বলেন, ‘‘বিদায়ী সভাপতি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে তাতে অধ্যক্ষ পরিষদকে পার্টি করেছেন। এর সঙ্গে অধ্যক্ষ পরিষদের যে কোনও সম্পর্ক নেই, তা ইতিমধ্যেই আমরা মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছি। আমাদের অগোচরে যা করার করা হয়েছে।’’ পূর্বতন সভাপতি অধ্যক্ষ পরিষদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছেন বলেও মানসের অভিযোগ।
পূর্ণচন্দ্রের অবশ্য ব্যাখ্যা, এ দিন মূল কমিটি তৈরি হয়েছে। এর পরে সহ-সভাপতি এবং সহ-সম্পাদকদের মনোনীত করা হবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধের ক্ষেত্রে তাঁর ব্যাখ্যা, তাঁরা দায়িত্ব নিয়ে এসে দেখেন, পুরনো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি চালু নেই। এর পরে তাঁরা নতুন অ্যাকাউন্ট খোলেন। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন ঘিরে জটিলতায় তাঁরা সব নথি জমা দিতে পারেননি। সেই জন্য অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
পূর্ণচন্দ্রদের এ দিনের সম্মেলনে অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি মনোনীত হন স্যার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মণিশঙ্কর রায়। সাধারণ সম্পাদক হাওড়া নরসিংহ দত্ত কলেজের অধ্যক্ষা সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোষাধ্যক্ষ এবং অফিস সেক্রেটারি হয়েছেন যথাক্রমে ক্যালকাটা গার্লস কলেজের সত্যা উপাধ্যায় এবং হাওড়া লালবাবা কলেজের সঞ্জয় কুমার।