গরমে ভাল থাকুন
তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। অসহ্য গরম মোকাবিলা করার প্রাথমিক উপায়গুলি মনে রাখুন
অসহনীয় গরমের মোকাবিলা করা ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। হিট স্ট্রোকের ঘটনা তো বটেই, পাশাপাশি হিট ডায়রিয়া, হিট ক্র্যাম্প-সহ নানা সমস্যা দেখা দেয় শুধু অত্যধিক গরমের কারণে। কিছু প্রাথমিক সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার এ সময়ে।
হিট স্ট্রোক
গরমকালের সবচেয়ে চেনা সমস্যা। খুব জরুরি দরকার না থাকলে দুপুরে (বেলা ১১টা-৩টে) বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। যদি একান্তই বেরোতে হয়, গা-ঢাকা, ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরে বেরোন। মাথায় টুপি কিংবা ছাতা। আর প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। জেনারেল ফিজ়িশিয়ান অরুণাংশু তালুকদার বললেন, ‘‘শুধু জলের বদলে তাতে একটু নুন, চিনি আর লেবু মিশিয়ে নিলে সবচেয়ে ভাল। তবে শরবত বানিয়ে বোতলে ভরে সঙ্গে নিয়ে বেরোলে সেই বোতল একবার খোলার পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে শেষ করতে হবে। ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে নুন বেরিয়ে যায়, তাই শরবতে নুন মেশানো জরুরি। আর তা শরীরে আত্তীকরণে সাহায্য করে গ্লুকোজ়। কাজেই শুধু গ্লুকোজ় খেয়ে লাভ নেই।’’
হিট ক্র্যাম্প
ট্রাফিক পুলিশ, ডেলিভারি কর্মী… যাঁদের পেশার প্রয়োজনে দিনের বেশির ভাগ সময়েই রাস্তায় থাকতে হয়, তাঁদের হিট স্ট্রোক কিংবা হিট ক্র্যাম্পের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কিছুক্ষণ অন্তর নুন-চিনি-লেবুর জল তো বটেই, সেই সঙ্গে বাইরের তেল-মশলাযুক্ত খাবারও এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ‘‘কাটা ফল না খেয়ে গোটা ফল কিনে কেটে খান। ডাবের জল খান। রাস্তা থেকে জল না খেয়ে বোতল সঙ্গে নিয়ে বেরোন,’’ বললেন ডা. তালুকদার।
একটানা গরমে যাঁদের থাকতেই হয়, তাঁদের কিছুক্ষণ অন্তর ছায়াযুক্ত কোনও জায়গায় বিশ্রাম নিতে হবে। কাজে বেরোনোর আগে ও বাড়ি ফিরে এসে স্নান করতে হবে। তবে রোদ থেকে ফিরেই স্নান নয়। তেমনই গরম থেকে এসেই এসিতে ঢোকা বা ঠান্ডা জল খাওয়া চলবে না।
হিট র্যাশ
সূর্যের তাপের প্রাবল্যে এ সময়ে ত্বকের ক্ষতি হয় সবচেয়ে বেশি। নিয়মিত ছাতা, টুপি, সানস্ক্রিন ব্যবহার করতেই হবে। ছোটদের জন্যও আলাদা সানস্ক্রিন পাওয়া যায়। র্যাশ বেরোলে অনেকেই পাউডার ব্যবহার করেন। তবে পাউডার ঘামে গলে গিয়ে রোমকূপের মুখ বন্ধ করে সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে স্নানের পরে অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড লাগাতে পারেন। তৈলাক্ত প্রসাধনী, অতিরিক্ত মেকআপ এ সময়ে এড়িয়ে চলাই ভাল।
বাচ্চাদের জন্য
ভাজাভুজি জাতীয় খাবার কম দিতে হবে এ সময়ে। ডিহাইড্রেশন এড়াতে বেশি করে জল খাওয়াতে হবে, দিনে দু’বার স্নান করিয়ে শরীর ঠান্ডা রাখতে হবে। গরম খাবার দেওয়ার পরিবর্তে বাড়িতে তৈরি শরবত, ফলের রস দিন। হাই প্রোটিন, গরম দুধ ইত্যাদি এ সময়ে না দেওয়াই ভাল।
বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে শরীরকে মানিয়ে নিতে শিখতে হবে ধীরে
ধীরে। প্রাথমিক কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলেই গ্রীষ্মকালীন সমস্যা এড়ানো সম্ভব।