জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে ‘আমরা-ওরা’
সৌমেন মণ্ডল
হলদিয়া: রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আগেই জানিয়েছেন, আমন্ত্রণ পেলেও দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে যাবেন না। নিজের জেলায় নতুন এই ধর্মস্থানে তিনি পরেও যাবেন না বলে জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত তালিকাতেও ভাগাভাগি করার অভিযোগ উঠল। বিরোধীদের দাবি, প্রশাসনের তরফে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। কিন্তু তৃণমূল ছাড়া, অন্য কোনও দলের জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ করা হচ্ছে না। তৃণমূলের বক্তব্য, এটা প্রশাসনিক অনুষ্ঠান। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।
৩০ এপ্রিল দিঘার নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৯ এপ্রিল হবে বিশেষ হোম-যজ্ঞ। সে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের তালিকা জেলার বিডিওদের পাঠানো হয়েছে। সে তালিকায় নাম রয়েছে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যদের। তবে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষদের নাম আমন্ত্রিত তালিকায় নেই। ব্লক প্রশাসনের তরফেই তালিকা ধরে আমন্ত্রিতদের জানানো হচ্ছে। ব্লক প্রশাসন থেকেই আমন্ত্রণপত্র এবং অনুষ্ঠানে ঢোকার পাস সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক মেঘনাদ পালের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল আমলে সরকার আর প্রশাসন মিলেমিশে একাকার। এখন সরকার জগন্নাথদেবের আরাধনাতেও রাজনীতি করছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পরিতোষ পট্টনায়কেরও বক্তব্য, ‘‘দিঘায় মন্দির উদ্বোধনের প্রশাসনিক অনুষ্ঠানকে দলীয় কর্মসূচিতে পরিণত করছে তৃণমূল সরকার। বিরোধী দলের কোনও জনপ্রতিনিধি উপস্থিত থাকলে যদি অস্বস্তিকর প্রশ্ন করেন, তা হলে বিপদে পড়তে পারেন তৃণমূল নেত্রী। সে জন্যই সতর্কতামূলক ভাবে নিজের দলের মধ্যেই আমন্ত্রিত তালিকা সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’’
তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘এটা প্রশাসনিক অনুষ্ঠান। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ এ প্রসঙ্গে জানতে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজির সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।