‘গাজ়িয়াবাদের হার্ড ডিস্কে অযোগ্য-সূত্র’
শুভাশিস ঘটক
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গাজ়িয়াবাদের একটি সংস্থার কর্মচারীর বাড়ি থেকে পাওয়া হার্ড ডিস্কের তথ্যে প্রকৃত যোগ্য-অযোগ্য তালিকা বাছাইয়ের সূত্র রয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। গাজ়িয়াবাদের নাইসা সংস্থার কর্মচারী পঙ্কজ বনসলের বাড়ি থেকে কম্পিউটারের তিনটি হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হয়, সেই তথ্য খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে বলে সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের
সূত্রে দাবি।
ওই তিনটি হার্ড ডিস্ক থেকে পাওয়া ১২ হাজারের কাছাকাছি ‘অযোগ্য’ প্রার্থীর তথ্য উচ্চ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে বলে সিবিআই সূত্র জানাচ্ছে। তদন্তকারীদের কথায়, নাইসা-র কর্মচারী পঙ্কজ বনসলের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কের ডেটাবেস বা তথ্যভান্ডার অনুযায়ী, ২৬ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ হাজারের কাছাকাছির ক্ষেত্রে গরমিল পাওয়া গিয়েছিল। সাদা খাতা জমা দেওয়া বা নামমাত্র ঠিক উত্তর দেওয়া পরীক্ষার্থীদের অনেককেই তালিকার প্রথম দিকে রাখা হয়েছিল বলে তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি।
তদন্তকারীদের দাবি, নাইসা কর্তা নীলাদ্রি ঘোষের নির্দেশে পঙ্কজ পরীক্ষার্থীদের স্ক্যান করা ওএমআর শিটে (উত্তরপত্র) নম্বর বাড়ানোর কাজ করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে কবুল করেছিলেন। এর পরেই তাঁর বাড়ি থেকে ওই সব হার্ড ডিস্ক বাজেয়াপ্ত করা হয়। পাশাপাশি, পঙ্কজের বয়ানের ভিত্তিতে নীলাদ্রিকে গ্রেফতারও করা হয়। নীলাদ্রি এখন জামিনে মুক্ত। তদন্তকারীদের দাবি, পঙ্কজ ওই মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। নাইসা অধিকারিক এবং এ রাজ্যে এসএসসি-র তৎকালীন কর্তাদের যোগসাজশে কী ভাবে দুর্নীতি হয়েছিল— তা পঙ্কজের বয়ান থেকেই স্পষ্ট হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি। তাদের তদন্তে উঠে এসেছে, এসএসসি-র প্রাক্তন সচিব সুবীরেশ ভট্টাচার্যের পাঠানো তালিকা ধরে ধরে নাইসা আধিকারিকেরা পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিটে কারচুপি করেন। এসএসসি-র তৎকালীন কোনও কোনও আধিকারিকও এই কারচুপিতে সরাসরি জড়িয়ে বলে সিবিআই
সূত্রের দাবি।
এসএসসি-র কয়েক জন কর্মচারী এ মামলার সাক্ষী। উচ্চ আধিকারিকদের নির্দেশ পালন করে কারচুপিতে তাঁরাও জড়িত বলে সিবিআই সূত্রে দাবি। তদন্তকারীদের কথায়, ‘‘সাদা খাতা জমা দেওয়া বা নামমাত্র উত্তর লেখা পরীক্ষার্থীদের একটি বড় অংশকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাতে টাকার বিনিময়ে কী ভাবে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল— সেই বিষয়ে জানা গিয়েছে।’’
সিবিআইয়ের কর্তাদের দাবি, সমস্ত তদন্ত রিপোর্ট এবং চার্জশিট ও নথি নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে পেশ করা হয়েছে। তদন্তের আরও কিছু অগ্রগতি হয়েছে। খুব শীঘ্রই তদন্তের সাম্প্রতিক রিপোর্ট নিম্ন এবং উচ্চ আদালতে জমা দেওয়া হবে।