হাওয়ায় ছড়াল দাহ্য বস্তুর গুদামের আগুন, আতঙ্ক ধাপায়
নিজস্ব সংবাদদাতা
ই এম বাইপাস লাগোয়া ধাপায় বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেল প্লাস্টিক এবং টায়ারের গুদাম-সহ দু’টি কারখানা। খবর পেয়ে দমকলের ১২টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দিনের ব্যস্ত সময়ে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনও প্রাণহানি না ঘটলেও আতঙ্ক ছড়ায় গোটা এলাকায়।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ ধাপা সংলগ্ন দুর্গাপুরে একটি প্লাস্টিকের গুদাম থেকে প্রথমে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন স্থানীয়েরা। দ্রুত তাঁরা প্রগতি ময়দান থানা এবং দমকলে খবর দেন। খবর পেয়ে প্রথমে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের চারটি ইঞ্জিন। যদিও দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছনোর আগেই ঝোড়ো হাওয়ায় আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। গোটা এলাকা জুড়ে প্লাস্টিক, পোড়া মোবিল থেকে শুরু করে দাহ্য পদার্থ ছড়ানো-ছিটানো থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে যায়। একটা সময়ে পরিস্থিতি এমন হয় যে, কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। শহরের কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দৃশ্যমান হয়। এ দিকে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগুন বাড়তে থাকায় প্লাস্টিকের গুদাম সংলগ্ন বস্তির বাসিন্দাদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই ঘর থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী বার করে অন্যত্র সরিয়ে ঘর খালি করতে শুরু করেন।
আগুন নেভানোর কাজে দমকলের আরও ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে গুদাম ভর্তি দাহ্য পদার্থ আর সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার জেরে আগুনের উৎসস্থলে পৌঁছতেই বেগ পেতে হয় দমকলকর্মীদের। বেশ কিছু সময় চেষ্টার পরে সফল হন তাঁরা। প্রায় ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। যদিও তার আগেই একাধিক গুদাম-সহ ভিতরে থাকা একটি লরি ভস্মীভূত হয়ে যায়।
কিন্তু কী ভাবে লাগল আগুন? স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গুদাম সংলগ্ন একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার আছে। সেখান থেকেই প্রথমে আগুনের ফুলকি দেখা যায়। তার পরে আগুন ছড়িয়ে যায়। স্থানীয় এক বাসিন্দা অমিত শর্মার কথায়, ‘‘মাঠে কাজ করছিলাম। হঠাৎ ফোনে আগুনের কথা জানতে পারি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সবাই মিলে চেষ্টা করলেও আটকানো যায়নি।’’ বাসিন্দারা দমকলের ইঞ্জিন দেরিতে আসার অভিযোগও করেছেন। সিইএসসি-র তরফে যদিও ট্রান্সফর্মার থেকে আগুন ছড়ায়নি বলে দাবি করা হয়েছে। সিইএসসি-র এক কর্তা অভিজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আগুন নেভার পরে আমরা ট্রান্সফর্মার পরীক্ষা করেছি। সেখান থেকে আগুন লাগার কোনও প্রমাণ মেলেনি।’’
আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখছে দমকল এবং পুলিশ। গুদাম ও কারখানাগুলিতে আদৌ কোনও অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে উপস্থিত আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। এ দিকে, এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে এ দিন দুপুরে আটকে যায় ধাপামুখী পুরসভার ডাম্পারগুলি। ফলে সাময়িক যানজট দেখা যায়। পরে অবশ্য আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে একে একে গাড়িগুলি গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।