জবরদখলের শঙ্কা কাটাতে পুরসভার গচ্চা যাবে আড়াই কোটি!
দেবাশিস ঘড়াই
খালি জমি পড়ে থাকলেই জবরদখল— এ রাজ্যে এটা পরিচিত দৃশ্য। আর সেই জবরদখলের শঙ্কা কাটাতেই কোষাগার থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা গচ্চা যেতে চলেছে কলকাতা পুরসভার! কারণ, গার্ডেনরিচ ভাগাড়ের একাংশের জমি জবরদখলের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তাই তা সুরক্ষিত রাখতেই ঘেরার (ফেন্সিং) পরিকল্পনা করা হয়েছে, যার জন্য খরচ হতে চলেছে ওই পরিমাণ টাকা।
ওই জমিতে তৈরি হবে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট। সঙ্গে গড়ে তোলা হবে গ্যারাজ, পার্কিং শেড। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধি অনুযায়ী, শহরের আবর্জনা বৈজ্ঞানিক নিয়মে প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্ব পুরসভার। সেই কাজ ঠিক মতো না করায় কলকাতা পুরসভাকে ইতিমধ্যেই জরিমানা করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। ভবিষ্যতে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে।
এই নির্দেশ মাথায় রেখেই গার্ডেনরিচের পুরনো ভাগাড়ে ১.৫ লক্ষ মেট্রিক টন বর্জ্য সরাতে শুরু হয়েছে বায়ো মাইনিংয়ের কাজ। ওই কাজের জন্য ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ওয়ার্ক অর্ডার জারি হয়েছিল। এই কাজে প্রায় ২০ একর জমি পরিষ্কার হবে বলে
জানিয়েছে পুরসভা। বর্তমানে ওই জমির চারপাশ ঘেরা নেই। ফলে, পরিষ্কার হওয়ার পরে ফের জমি দখলের চেষ্টা হতে পারে বলেই আশঙ্কা পুরসভার। তাই উচ্চ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই জমিতে ‘ফেন্সিং’ করার জন্য যৌথ পরিদর্শন হয়েছে এবং প্রস্তাব তৈরি করে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত খরচ ২,৫৫,৫৪,৬৫৩ টাকা।
পুরসভার অভ্যন্তরীণ নথিতে উল্লেখ, বর্তমানে জঞ্জাল সাফাই বিভাগের অধীনে থাকা ১০টি গ্যারাজেই জায়গার অভাবে বর্জ্য পরিবহণের যানবাহন রাখতে
সমস্যা হচ্ছে। কোথাও নিরাপত্তার অভাব, কোথাও আবার যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পুরসভার আশা, গার্ডেনরিচে নতুন গ্যারাজ ও বর্জ্য ইউনিট তৈরি হলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে। পাশাপাশি, বর্জ্য নিষ্পত্তির ব্যবস্থা আধুনিক ও পরিকল্পিত হবে। প্রস্তাবটি ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে মেয়র-সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পায়। ৬ মার্চ ওয়ার্কস কমিটির বৈঠকে পাশ হয়। পুর হিসাব দফতর জানিয়েছে, নির্ধারিত বাজেট থেকেই খরচ করা যেতে পারে।
পুরসভা দরপত্র ডাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই বছরেই জমি ঘেরা শুরু হতে পারে বলে দফতরের আশা।