বেপরোয়া পারাপার, বাসের চাকায় পিষে মৃত্যু
নিজস্ব সংবাদদাতা
গাড়ি চলাচলের সিগন্যাল খুলে গিয়েছে, অথচ রাস্তা পারাপার বন্ধ হয়নি! যার জেরে শনিবার সকালে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। উল্টোডাঙার হাডকো মোড়ে। জখম ব্যক্তিকে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ বাস ও চালককে আটক করেছে। মানিকতলা থানা তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় (৫৫)। বাড়ি বেলেঘাটার রাসমণি বাজারে। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে রয়েছেন। দিন পনেরো আগেই উজ্জ্বল দাদু হয়েছেন। পেশায় বৈদ্যুতিন সামগ্রীর মিস্ত্রি উজ্জ্বল এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ কাজে বেরোন। ঘণ্টা দেড়েক পরে তাঁরই মোবাইল থেকে ফোন আসে স্ত্রী ডলির কাছে। জানানো হয় দুর্ঘটনার খবর।
যে বাসের ধাক্কায় উজ্জ্বলের মৃত্যু হয়েছে, সেটি শিলিগুড়ি-কলকাতা রুটে চলে। বাসটি এ দিন সকালেই কলকাতায় ফিরে ধর্মতলায় যাত্রী নামিয়ে করুণাময়ীতে যাচ্ছিল। পথে ঘটে যায় এই দুর্ঘটনা। চালক করণজিৎ সিংহ পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, হাডকো মোড়ের কাছে তিনি সিগন্যালে বাস দাঁড় করান। সিগন্যাল সবুজ হলে বাস চালাতে শুরু করেন। হঠাৎ বাসের সামনে এক ব্যক্তি চলে আসেন। যদিও তখন রাস্তা পারাপারের সিগন্যাল সবুজ ছিল না। দ্রুত ব্রেক কষলেও দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি। বাসচালকের দাবি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। সারা রাত বাস চালানোর ফলে তাঁর চোখ লেগে যায় কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এ দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায়, সেখানে বেপরোয়া পারাপার বন্ধ হয়নি। রাস্তার ধারের রেলিংয়ের ফাঁক গলেও বিপজ্জনক পারাপার চলছে। পুলিশি নজরদারির অভাবও চোখে পড়ল। মৃতের বাড়িতে গেলে জানা যায়, সদ্য সন্তান প্রসব করা মেয়েকে কিছু জানানো হয়নি। উজ্জ্বলের স্ত্রী জ্ঞান হারাচ্ছেন মাঝেমধ্যেই। কোনও মতে বললেন, ‘‘মেয়ের ঘরে নাতি হয়েছে। এখন আনন্দের সময়। তার মধ্যেই এ সব ঘটে গেল। আজ নাতির জন্য খেলনা কিনে ফিরবে বলেছিল। কিন্তু মানুষটাই তো আর ফিরবে না।’’