অনটনকে পরাজিত করে মেধা তালিকায় সাহিদারা
নিজস্ব প্রতিবেদন
মাদ্রাসা বোর্ডের মেধা তালিকার সম্ভাব্য যুগ্ম প্রথম মালদহের রতুয়ার সাহিদা পারভিনের এখন চিন্তা, সামনের দিনে কী ভাবে পড়াশোনা করবে। সাহিদার বাবা টোটো চালান। যা আয় হয়, তাতে সংসার চালানোই দায়। ফাজিল পরীক্ষায় সম্ভাব্য প্রথম দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ইয়ামিন শেখেরও একই চিন্তা। তাঁর বাবাও যাত্রিবাহী গাড়ির চালক। আলিম পরীক্ষায় প্রথম উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ইটিন্ডার বাসিন্দা শাহিদ আলম মণ্ডলের বাবা ভিন্ রাজ্যে সেলাইয়ের কাজ করেন। তিন জনেরই ভবিষ্যতের স্বপ্নের পথে বাধা অর্থ।
মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষায় ভাদো বটতলা হাই মাদ্রাসার ছাত্রী সাহিদার সঙ্গে যুগ্ম ভাবে প্রথম রতুয়ারই ভগবানপুর হাই মাদ্রাসার ফাহামিদা ইয়াসমিন। দু’জনেই পেয়েছে ৭৮০। আলিমে প্রথম শাহিদ আলম মণ্ডল পেয়েছে ৮৭৩ আর ফাজিলে প্রথম ইয়ামিন পেয়েছেন ৫৬২।
মাদ্রাসা বোর্ডের সম্ভাব্য দ্বিতীয় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের সাগর হাই মাদ্রাসার সামসুন নেহার। পেয়েছে ৭৭৬। মালদহের এই তিন কৃতী স্থানীয় বেসরকারি মিশনে পড়াশোনা করত। সাহিদাদের বেড়ার বাড়িতে একটাই ঘর। ফাহামিদার বাবার ভগবানপুরে পোশাক বিক্রির ছোট দোকান। মোটামুটি সচ্ছল। সামসুনের বাবা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। কৃতী তিন ছাত্রীই চায়, চিকিৎসক হতে। সাহিদা এবং ফাহামিদা জানাচ্ছে, প্রথম হবে ভাবতে পারেনি।
ইটিন্ডার শাহিদ পড়ত আমিনিয়া মাদ্রাসায়। পরে বাদুড়িয়ার কাটিয়া শাহ রজব আলি সিনিয়র মাদ্রাসায় ভর্তি হয়, সেখান থেকেই পরীক্ষা। ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াই স্বপ্ন শাহিদের। বাবা কাইয়ুম মণ্ডল বলেন, “অভাবের কারণে ভাল গৃহশিক্ষক দিতে পারিনি। তাতেই ছেলে এই ফল করেছে। জানি না, আগামী দিনে কী হবে।” খেরিয়া সিদ্দিকীয়া সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্রী বাসন্তীর ইয়ামিন। মাটির ঘরে আর্থিক অনটনের মধ্যেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগে আলিমেও সপ্তম হয়েছিলেন ইয়ামিন। হতে চান অধ্যাপক। ফাজিলের মেধা তালিকায় দ্বিতীয় বাকিবুল্লা গায়েন হুগলির জাঙ্গিপাড়ার একটি মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করেছেন। পরীক্ষা দিয়েছিলেন হরিপালের ইসলামনগর দোঁক নাসরুল উলুম সিদ্দিকীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।