গোধরা: ৯ রেলপুলিশের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বহাল
আমদাবাদ, ৩ মে: গোধরায় ২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সূত্রে রেল পুলিশের ন’জন কনস্টেবলের বরখাস্তের নির্দেশ বহাল রাখল গুজরাত হাই কোর্ট। ওই ন’জন পুলিশ
কনস্টেবলের ডিউটি ছিল সাবরমতী এক্সপ্রেসে। কিন্তু ট্রেনটি ছ’ঘণ্টা দেরিতে
চলায় তাঁরা সাবরমতী এক্সপ্রেসে না উঠে শান্তি এক্সপ্রেসে আমদাবাদে ফিরে যান। বিচারপতি বৈভবী ডি নানাবতী রায়ে বলেছেন, ‘ওই পুলিশকর্মীরা যদি সে দিন কর্তব্য পালন করতেন, তা হলে এত বড় ঘটনা (সাবরমতী এক্সপ্রেসে অগ্নিসংযোগ) এড়ানো সম্ভব হত। তাঁদের কর্তব্যে অবহেলা ও গাছাড়া ভাব অত্যন্ত স্পষ্ট।’’
২০০২ সালে গোধরা কাণ্ডের পরই ওই কনস্টেবলদের সাসপেন্ড করা হয়, বিভাগীয় তদন্তের ভিত্তিতে বছর কয়েক পরে তাদের বরখাস্ত করা হয়। প্রসঙ্গত, ওই কনস্টেবলরা সাবরমতী এক্সপ্রেসেই উঠেছিলেন বলে মিথ্যে নথিভুক্তও করেন। সে কথা উল্লেখ করে বিচারপতি রায়ে জানান, সাবরমতী এক্সপ্রেস এ শ্রেণির ট্রেন। তাতে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা বেশি। সেখানে তিন জন সশস্ত্র কনস্টেবল ছাড়াও সাদা পোশাকে পুলিশ থাকা উচিত ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০০২-এর ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরায় সাবরমতী এক্সপ্রেসের এস-৬ কোচের অগ্নিকাণ্ডে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের অধিকাংশই ছিলেন অযোধ্যা থেকে ফেরা করসেবক। সেই ঘটনার পরই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে গুজরাত জুড়ে। দাঙ্গার বলি হন হাজারেরও বেশি মানুষ। গোধরাকাণ্ডের তদন্তে গুজরাত সরকারের গঠিত নানাবতী-মেহতা কমিশন মত দিয়েছিল, ট্রেনে আগুনের নেপথ্যে ষড়যন্ত্র ছিল। রীতিমতো পরিকল্পনা করে আগুন ধরানো হয়েছিল ট্রেনে। যদি রেল মন্ত্রকের গঠিত বন্দ্যোপাধ্যায় কমিশনের মত, তা ছিল দুর্ঘটনা।
২০১১-র পয়লা মার্চ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গোধরাকাণ্ডে ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। ১১ জনের ফাঁসির সাজা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ২০ জনের। মুক্তি পান ৬৩ জন। শাস্তির রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দোষী সাব্যস্তেরা গুজরাত হাইকোর্টে মামলা করেছিল। ২০১৭-র অক্টোবরে হাই কোর্ট ১১ জনের ফাঁসির সাজা রদ করে যাবজ্জীবনের সাজা দিয়েছিল। ২০ জনের যাবজ্জীবন বহাল রাখা হয়। যদিও গোধরা পরবর্তী দাঙ্গায় দোষী সাব্যস্ত অনেকেই গুজরাতের
বিজেপি সরকারের সম্মতিতে সাজার মেয়াদ শেষের আগেই জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে। সংবাদ সংস্থা