ত্রাণের জাহাজে ড্রোন হানা, আঙুল ইজ়রায়েলের দিকে
গাজ়া, ৩ মে: গাজ়ায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য রওনা হওয়া একটি জাহাজে এ বার ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ত্রাণ সংস্থা ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’-এর ‘কনসায়েন্স’ নামে একটি জাহাজ শুক্রবার মাল্টা থেকে প্রায় ১৬ মাইল দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ড্রোন দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর। শান্তি কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবীদের পক্ষ থেকে ইজ়রায়েলকেই এই হামলার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে সরাসরি কোনও প্রমাণ পেশ করা হয়নি এবং ইজ়রায়েলি সামরিক বাহিনীও কোনও মন্তব্য করেনি।
জাহাজে ছিলেন তুর্কি কর্মী মেসিদ বাগসিভান। তিনি জানান, হামলার ফলে দু’টি বিস্ফোরণ হয় এবং জাহাজে আগুন লেগে যায়। তাঁদের শেয়ার করা ভিডিয়োতে জাহাজের ডেকে আগুন দেখা গিয়েছে। কেউ হতাহত হননি। কিন্তু আগুনের ফলে জাহাজটি সমুদ্রের মধ্যে দাঁড়িয়ে পড়েছে। জাহাজের কর্মীরাই প্রাথমিক ভাবে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। তার পর একটি টাগবোট সাহায্যের জন্য
এগিয়ে আসে।
জাহাজটি সপ্তাহের শুরুতে ১২ জন কর্মী এবং চার জন অসামরিক নাগরিককে নিয়ে তিউনিসিয়া ছেড়েছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ছিল তাতে। আগুনে জেনারেটর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জাহাজটি এখন অচল এবং একটি বন্দর খুঁজে পাওয়ার জন্য মরিয়া। কারণ মাল্টা, গ্রিস এবং তুরস্ক জাহাজটি বাজেয়াপ্ত করার হুমকি দিয়ে রেখেছে। উপরন্তু হামলার ঠিক আগেই জাহাজটির পতাকা প্রত্যাহার করে নিয়েছে পালাউ দ্বীপরাষ্ট্র। তার ফলে জাহাজটির আইনি বৈধতা নড়বড়ে জায়গায় রয়েছে। তুরস্ক ড্রোন হামলার নিন্দা করে বলেছে, এতে সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিপন্ন হবে।
গাজ়ায় ত্রাণ সরবরাহ ঘিরে উত্তেজনা এমনিতেই চরমে। ইজ়রায়েল গত দুই মাস ধরে গাজ়ায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে চলেছে। তাদের দাবি, যত ক্ষণ না হামাসের হাতে ত্রাণ চলে যাওয়া আটকানো যাচ্ছে, তত ক্ষণ তারা অবরুদ্ধ অঞ্চলে খাদ্য, জল, জ্বালানি, ওষুধ প্রবেশ করতে দেবে না। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং অপরাপর আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন যে, ইজ়রায়েল তার সামরিক বাহিনীর হাতে ত্রাণ বিতরণের ক্ষমতা দেওয়ার যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। এর ফলে সামরিক ও রাজনৈতিক অভিসন্ধি মানবিক সহায়তাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। বিপুল সংখ্যক প্যালেস্টাইনি মানুষকে উৎখাত হতে বাধ্য করবে। এটা আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী। ত্রাণ পৌঁছনোর পর ইজ়রায়েলের কোনও ভূমিকা থাকা উচিত নয়। বেশির ভাগ সংস্থাই জানিয়েছে যে তারা এই ধরনের কোনও ব্যবস্থা মানবে না। রাষ্ট্রপুঞ্জের মুখপাত্র জেন্স লায়েরকে বলেছেন, “আমাদের কাজকে সহজ করে দেওয়াই ইজ়রায়েলের দায়িত্ব। তা না করে ওরা আমাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।” সংবাদ সংস্থা