অচেনা হিংসা কেন
পারেনি। মহিলারাও জানান, তাঁরা স্বেচ্ছায় এসেছেন। পরে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসংবেদনশীল আচরণের অভিযোগ করে শুভেন্দু দাবি করেছেন, ‘‘ওই পরিবার কলকাতায় গিয়েছে, হাই কোর্টে মামলা করবে। পুলিশের তদন্তে আস্থা নেই। সিবিআই তদন্ত চাইবে হাই কোর্টে। পুলিশের থোঁতা মুখ ভোঁতা করে দিয়েছে! কাল রাত থেকে ওই পরিবারের উপরে খুব অত্যাচার হয়েছে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী আখরুজ্জামান অবশ্য বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সোমবার মুর্শিদাবাদে আসছেন। তিনিই যা বলার, বলবেন।’’
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তার জবাবে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, ‘কোনও কোনও মহল থেকে’ পুলিশের বিরুদ্ধে ওই পরিবারকে হুমকি দেওয়ার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ‘সর্বৈব মিথ্যা’। যদিও একটি সূত্রের দাবি, ওই পরিবারের তরফে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে চিঠি লিখে নিরাপত্তার আর্জি জানিয়ে বলা হয়েছে, তাঁদের যেন কলকাতা হাই কোর্টে নিরুপদ্রবে মামলা করতে যেতে দেওয়া হয়। তদন্ত প্রসঙ্গে এক পুলিশ-কর্তার বক্তব্য, ‘‘বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গড়ে তদন্ত হচ্ছে, অভিযুক্তেরা গ্রেফতার হয়েছে। দু’জন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। আর এলাকায় পুলিশ-প্রশাসনের তরফ থেকে যা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সবই মানুষের আস্থা বাড়ানোর জন্য।’’
কিন্তু আস্থা বেড়েছে কি? তিনপাকুড়িয়া পঞ্চায়েতে দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা, ৭২ বছরের দীনবন্ধু প্রামাণিকের গলায় এখনও আতঙ্ক— ‘‘আমরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় দেখেছি। ও’পার থেকে লোক চলে এসেছে। এই অশান্তি হয়নি। মুর্শিদাবাদে রাজনৈতিক গোলমাল হয় কিন্তু এই তাণ্ডব! সে দিন সকাল থেকে কোথায় ছিল পুলিশ, কোথায় ছিল বিধায়ক-সাংসদ?’’
‘মৃতদেহে আতর ছড়িয়ে’ কী লাভ প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী কটাক্ষ করছেন, ‘‘পুলিশ ময়দানে নেমে পড়েছে নিহতদের পরিবারের লোকজনকে মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে ওঠাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলবেন, আমি আছি, কোনও চিন্তা নেই! গুলিবিদ্ধ ১৭ জন। তাঁদের কাছে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী?’’
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে প্রশাসন, শাসক দল। সেই সঙ্গেই থেকে যাচ্ছে দীনবন্ধুদের উত্তর সন্ধান— এ কোন মুর্শিদাবাদ? এ কেমন হিংসা?