গোটা বিশ্বের নজর চিনের গোপন অস্ত্র পিএল-১৫-এ
নয়াদিল্লি, ১০ মে: অবশেষে পাকিস্তান স্বীকার করল তারা ভারতের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে চিনের তৈরি পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল। তাদের এই স্বীকারোক্তি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে। কারণ, এই প্রথম কোনও যুদ্ধে দেখা মিলল চিনা ক্ষেপণাস্ত্রটির।
যুদ্ধক্ষেত্রে নবাগত ক্ষেপণাস্ত্রটি রেডার-পরিচালিত। বায়ু থেকে বায়ুতে ছোড়া দীর্ঘ দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্রটি ২০০ কিলোমিটার দূরে কোনও নিশানায় গিয়ে আঘাত হানতে সক্ষম। যুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই সুবিশাল গতিবিধি শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমানের জন্য রীতিমতো আতঙ্কের কারণ হতে পারে।
পঞ্জাবের হোশিয়ারপুর ও ভটিণ্ডায় ক্ষেপণাস্ত্রের যে ধ্বংসাবশেষ মিলেছিল, তা যে পিএল-১৫, জল্পনা কাটিয়ে সেটাও মেনেছে পাকিস্তানি বায়ুসেনা। ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চিনা ক্ষেপণাস্ত্রটি মাঝআকাশেই সফল ভাবে ধ্বংস করেছিল। কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্রটি নিয়ে প্রশ্ন জাগে।
দৃষ্টিক্ষমতার বাইরে গিয়ে কোনও নিশানায় সুনিপুণ ভাবে আঘাত হানতে পারদর্শী পিএল-১৫। ভারতের ডিআরডিও-র তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ‘অস্ত্র’-এর সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে এর। চিনের সঙ্গে বরাবরই ভাল সম্পর্ক পাকিস্তানে। ইসলামাবাদকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে বেজিং-ই। কিন্তু এই ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তানকে বেশি দিন হল দেয়নি চিন।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ সন্দীপ উন্নিথন বলেন, ‘‘পিএল-১৫ অনেক দীর্ঘ দূরত্বের চিনা ক্ষেপণাস্ত্র। প্রকাশ্যে খুব একটা দেখা মেলেনি এর। সম্ভবত এ বারই প্রথম এটি শত্রুপক্ষের নিশানায় ছোড়া হল। আমি এটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমাদের বিজ্ঞানীরা খুব গভীর ভাবে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে পর্যবেক্ষণ করছে। এর চরিত্র বিশ্লেষণ করছে।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘সত্যি বলতে কী, এই ক্ষেপণাস্ত্রটির কথা জানাই ছিল না। পর্দার আড়াল থেকে আচমকাই সামনে এসেছে। সম্প্রতি পাকিস্তানকে ক্ষেপণাস্ত্রটি দিয়েছে চিন। ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব যখন বাড়তে শুরু করেছিল, হয়তো তখন।’’
অস্ত্র ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে পিএল-১৫-এর প্রযুক্তিগত ভাবে কী কী মিল, কোথায় পার্থক্য জানার চেষ্টা করছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। উন্নিথন জানান, শুধু ভারতের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই ক্ষেপণাস্ত্রটি উদ্বেগের। কারণ এর অস্তিত্বই জানা ছিল না। পাকিস্তানের চিনা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার কথা প্রথমে স্বীকারই করছিল না বেজিং। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র স্পষ্টই বলেছিলেন, ‘‘এ বিষয়ে কিছু জানা নেই।’’ পাকিস্তান দাবি করেছিল, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ প্রতিহত করতে তারা চিনের তৈরি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে। কিন্তু সেই দাবিও খারিজ করে দিয়েছিল চিন। তাদের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেছিলেন, ‘‘এমন কিছু জানা নেই।’’ উন্নিথন বলেন, ‘‘চিনের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে। আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে পরবর্তী ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের অন্যতম মূল বিষয় হবে এটি। আমেরিকাও ক্ষেপণাস্ত্রটি খতিয়ে দেখব। কারণ যুদ্ধ লাগলে ভবিষ্যতে ওদেরকেও এই ক্ষেপণাস্ত্রের সম্মুখীন হতে হবে।’’ ইতিমধ্যেই শোনা গিয়েছে, পিএল-১৫-কে প্রতিহত করতে আমেরিকার ঘরে তৈরি হচ্ছে ‘এআইএম-২৬০ জয়েন্ট অ্যাডভান্সড ট্যাকটিকাল মিসাইল’। সংবাদ সংস্থা