ফৌজি আদলে পোশাক বিক্রি নিষিদ্ধ তিনটি জেলায়, সতর্ক করছে পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদন
সাধারণ নাগরিকদের সেনাবাহিনীর উর্দির রঙ এবং আদলে তৈরি করা পোশাক বিক্রি করা যাবে না— উত্তরবঙ্গের তিনটি জেলায় সেই নির্দেশ দিল পুলিশ। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি—তিন জেলায় গত দু’-চার দিন ধরে পুলিশকর্মীরা বিভিন্ন দোকানে গিয়ে পোশাক ব্যবসায়ীদের এই মর্মে সতর্ক করেছেন। কোচবিহারে শনিবার সকাল থেকে এই বার্তা দিতে পথে নেমেছিল জেলা পুলিশের দল। কোচবিহারের জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেছেন, “কেউ যাতে পোশাকের সুযোগ নিয়ে কোনও নাশকতামূলক কাজ করতে না পারে, সে জন্য করা হয়েছে এই পদক্ষেপ।”
পহেলগামে পর্যটকদের হত্যা করতে আসা জঙ্গিরা সেনা-পোশাকে এসেছিল বলে অভিযোগ। ২০১৬ সালে পঞ্জাবের পঠানকোটের হামলাতেও জঙ্গিরা সেনার পোশাকে এসেছিল। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য গোয়েন্দা দফতর সূত্রের বক্তব্য, উত্তর-পূর্ব ভারতে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের ডেরায় হানা দিয়ে সেনার পোশাক উদ্ধার হয়েছে।
আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে একাধিক দোকানে সেনা জওয়ানদের উর্দির মতো দেখতে কাপড় বিক্রি হয়। আলিপুরদুয়ারে বায়ু সেনার উর্দির মতো দেখতে পোশাক বিক্রির দোকান রয়েছে। জলপাইগুড়িতে আধা সামরিক বাহিনীর উর্দির মতো পোশাক তৈরির একাধিক দর্জির দোকান রয়েছে।
কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। তাতে বেশ কিছু জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। সীমান্তের থেকে খুব দূরে নয় ‘স্পর্শকাতর’ স্থান। সেই সব এলাকার আশপাশের দোকানে বেশি করে প্রচার চালিয়েছে পুলিশ। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার উমেশ গণপত খণ্ডবহালের কথায়, “কয়েকটি শহর-জনপদ চিহ্নিত করে সেনার উর্দির মতো পোশাক সাধারণ বাসিন্দাদের বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছে। কোনও সাধারণ বাসিন্দা সেনার উর্দির মতো পোশাক কোনও দোকান থেকে কিনেছেন কি না, সেই খোঁজও এই সুবাদে সহজে মিলবে।”
কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সূরজ ঘোষ বলেন, “সামরিক বাহিনীর জওয়ানেরা যে ধরনের পোশাক ব্যবহার করেন, তার মতো দেখতে বা সেই আদলের পোশাক যাতে কেউ বিক্রি না করেন, সে জন্য আমরা সবাইকে সতর্ক করেছি।” আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা প্রয়োজনীয় ছিল। সেই কাজটাই করেছে জেলা পুলিশ।”