ঈশানের প্রত্যাবর্তন, হার কোহলিদের
নিজস্ব প্রতিবেদন
২৩ মে: মাত্র তিন বল!
তাতেই শেষ হয়ে গেল আরসিবির যাবতীয় প্রতিরোধ। ১৬তম ওভারের চতুর্থ বলে এশান মালিঙ্গা রান আউট করলেন রজত পাটীদারকে (১৮)। শেষ বলে রোমারিয়ো শেফার্ডকে নিজের বলেই ক্যাচ ধরে ফেরালেন তিনি। ১৬৭-৩ থেকে আরসিবি হয়ে যায় ১৭৪-৫।
এর পরেই আরসিবির খেলার গতি নষ্ট হয়ে যায়। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে। জয়দেব উনাদকাটের বলে ২৪ রানে ফিরলেন জিতেশ শর্মা। এশানের চতুর্থ ওভারে ক্লাসেনের হাতে ক্যাচ তুলে টিম ডেভিড আউট হওয়ার পরেই সরকারি ভাবে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১৮৯ রানে অলআউট হয় আরসিবি। পরিসংখ্যান বলছে, শেষ ১৬ রানে সাত উইকেট হারিয়েছে আরসিবি। ফল- ৪২ রানে হার।
এ দিন বিরাট কোহলিদের সামনে সুযোগ ছিল পয়েন্ট টেবলে দু’য়ে উঠে আশার। কিন্তু হারের ফলে ১৩ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তিনে চলে গেল আরসিবি। পরের ম্যাচে শুধু জিতলেই চলবে না, প্রথম দু’য়ে থাকতে গেলে আরসিবিকে বাকি দলগুলির উপরেও নির্ভর করতে হবে।
অথচ হায়দরাবাদের ২৩১ রানের জবাবে শুরুটা দারুণ করেছিলেন দুই ওপেনার বিরাট কোহলি ও ফিল সল্ট। সাতটি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ২৫ বলে ৪৩ রান করে ফেরেন বিরাট। প্রত্যাবর্তন করা সল্ট তো বিধ্বংসী মেজাজে ছিলেন। চারটি চার ও পাঁচটি ছক্কার সাহায্যে করা ৩২ বলে ৬২ রান জয়ের মঞ্চ গড়ে দিয়েছিল। কিন্তু পাটীদার আউট হওয়ার পরেই শুরু হয় যাওয়া-আসার খেলা। পাটীদার এ দিন অবশ্য খেলেন ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে। আরসিবির অধিনায়কের দায়িত্ব সামলান জিতেশ শর্মা।
সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের হয়ে অভিষেক ম্যাচে মাত্র ৪৭ বলে ১০৬ রান করেছিলেন ঈশান কিষন। তার পর তাঁর ব্যাটে চলছিল রান খরা। বাকি ১১ ম্যাচে মাত্র ১২৫ রান করেছিলেন। শুক্রবার ফের সেই পুরনো ঈশানের ঝলক পাওয়া গেল। সাতটি চার এবং পাঁচটি ছক্কার সাহায্যে ৪৮ বলে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকলেন ঈশান। সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদও তুলল ২৩১-৬। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত ‘এ’ দলে সুযোগ পেয়েছেন ঈশান। তাঁর এই ছন্দ নিশ্চিত ভাবেই হাসি ফোটাবে নির্বাচকদের মুখে।
এত দিন ধরে শুরুতেই অতি আগ্রাসন দেখাতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসছিলেন ট্র্যাভিস হেড এবং অভিষেক শর্মা। এ দিনও আগ্রাসনের রাস্তা থেকে সরেনি এই জুটি। মাত্র ৩.৫ ওভারেই ৫৪ রান উঠে যায় ট্র্যাভিষেকের জুটিতে। তাঁকে ফেরান লুনগি এনগিডি। ততক্ষণে ১৭ বলে ৩৪ রান করে ফেলেছেন অভিষেক। পরের ওভারেই আউট হন হেড। তাঁকে ফেরান ভুবনেশ্বর কুমার। ১০ বলে মাত্র ১৭ রানই করেন করোনা সারিয়ে দলে ফেরা হেড।
৫৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পরে তখন হায়দরাবাদের সমর্থকরা ফের অশনি সংকেত দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু ভরসা যোগালেন ঈশান। থাকলেন শেষ ওভার পর্যন্ত। তাঁকে সঙ্গ দিলেন অবশ্য হেনরিখ ক্লাসেন (১৩ বলে ২৪), অনিকেত বর্মা (৯ বলে ২৬), প্যাট কামিন্স (৬ বলে ১৩)-রা। ফলে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকলেও কখনও রানের গতি কমেনি হায়দরাবাদের।
ম্যাচের সেরা ঈশান বলেন, “অভিষেক এবং হেডের ব্যাটিং দেখার পরেই ঠিক করি, এই পিচে কমপক্ষে ২০০ রান তুলতেই হবে। উইকেট পড়লেও ছন্দ নষ্ট হতে দিইনি।”
আগ্রাসন: ২৫ বলে ৪৩ রান করলেন বিরাট। (নিচে) ৪৮ বলে ৯৪ রানে অপরাজিত থেকে ছন্দে ফিরলেন ঈশান। শুক্রবার লখনউয়ে। পিটিআই