গরমের বন্ধু
এই প্রবল দাবদাহে গরমের হাত থেকে বাঁচতে সঙ্গে রাখুন কিছু গ্যাজেট
পাখার নীচ থেকে দু’মিনিট সরলেই ঘেমে জল। আবহাওয়া দফতর বলছে তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলেছে। ঘরে-বাইরে টেকা দায়। কিন্তু গরম বাড়ছে বলে তো এক জায়গায় চুপ করে বসে থাকা চলে না। তার উপরে রয়েছে লোডশেডিংয়ের সমস্যাও। সমাধানের উপায় হিসেবে রইল কিছু গ্যাজেটের খোঁজ—
- মিনি পোর্টেবল ফ্যান: ব্যাটারিতে চলে। ইউএসবি কেবলের মাধ্যমে ল্যাপটপ, কম্পিউটার বা পাওয়ার ব্যাঙ্কের মাধ্যমে চার্জ করার সুবিধেও রয়েছে। ছোট এই ফ্যানে গরমে সাময়িক স্বস্তি মেলে। এতে হাওয়ার গতি কম-বেশি করার সুযোগ থাকে। গরমে বাচ্চাদের স্কুলের ব্যাগেও দিয়ে দিতে পারেন এই পাখা।
- ডেস্ক ফ্যান: এটির সুযোগসুবিধে মিনি পোর্টেবল ফ্যানের মতো প্রায় একই, সঙ্গে এলইডি ডিসপ্লে স্ক্রিনে পাখার গতি, চার্জের পরিমাণ-সহ নানা খুঁটিনাটি দেখা যায়। টেবিলের উপরে দাঁড় করানো বা হুকে ঝোলানোর ব্যবস্থাও থাকে। হাওয়ার সঙ্গে সুগন্ধ ছড়ানোরও উপায় রয়েছে এই পাখায়।
- মিনি নেক ফ্যান: হাতে রাখার ঝামেলা নেই, ব্লুটুথ হেডফোনের মতো গলায় ঝুলিয়ে নিলেই হল। নেকব্যান্ড পছন্দমতো ছোট-বড় করা যায়। ব্লেড-সহ এবং ব্লেড ছাড়া দু’রকমই পাওয়া যায়। এলইডি ডিসপ্লে, ইউএসবি চার্জিং, হাওয়ার গতি কম-বেশি, ৩৬০ ডিগ্রি রোটেশনের সুবিধে ইত্যাদি রয়েছে। রান্নাঘরে হোক কিংবা শারীরচর্চার সময়ে এর ব্যবহার আরামদায়ক।
- পকেট সাইজ় এয়ারকুলার: আপনার হাতের স্মার্টফোনের চাইতেও একটু ছোট। অল্প জায়গা ঠান্ডা করতে কাজে লাগে। কুলারের মতোই এর ভিতরে জল বা বরফ দিলে ঠান্ডা হাওয়া বেরোয়। কুলার বা এসি দু’রকমই দেখতে পাওয়া যায়। সঙ্গে রয়েছে রঙবেরঙের এলইডি আলো। ইলেকট্রিক প্লাগের সুবিধে না থাকলে ল্যাপটপ বা পাওয়ার ব্যাঙ্কের সাহায্যেও চলতে পারে। হাওয়ার গতি, মোড, ব্লেডের দিক ইত্যাদি বদলের সুবিধে আছে।
- ফোল্ডেবল ফ্যান হ্যাট: মূলত বাচ্চাদের জন্য তৈরি, বড়দেরও পাওয়া যায়। হ্যাট বা ক্যাপের সামনের অংশে লাগানো থাকে ব্যাটারি নিয়ন্ত্রিত পাখা। ব্যাটারি চার্জ করারও সুবিধে থাকে।
- স্মার্ট ছাতা: অতিবেগুনি রশ্মি আটকায়। এই ছাতার উপরের দিকে ছোট ফ্যান থাকে, নীচে হাতলের কাছে জলের বোতলের ব্যবস্থা থাকে। এই জল থেকে ঠান্ডা হাওয়া তৈরি করে উপরের পাখার সাহায্যে তা ছড়িয়ে দেয় ছাতা। গরম বেশি লাগলে জল স্প্রে করা যায়।
- কুলিং টাওয়েল: খেলোয়াড়রা সাধারণত এই তোয়ালে ব্যবহার করেন। এই মাইক্রোফাইবার তোয়ালে জলে ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়ে ঘাড়, গলা বা মাথায় রাখলে ঘাম বাষ্প হয়ে যায়, তৎক্ষণাৎ ঠান্ডা অনুভূতি পাওয়া যায়। ক্ষতিকর সূর্যরশ্মিকেও আটকাতে পারে এই তোয়ালে। তবে খেয়াল রাখবেন গরমে বরফ ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে ব্যবহার করলে অতিরিক্ত ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। বাচ্চা বা বয়স্কদের জন্য সাবধানে ব্যবহার করা দরকার।
- স্মার্ট জলের বোতল: দীর্ঘক্ষণ জল ঠান্ডা-গরম তো রাখেই, সঙ্গে ব্লুটুথ, বিশেষ আলো ও অ্যালার্মের ব্যবস্থা থাকে, যা নিয়মিত সময় অন্তর জল খাওয়ার কথা মনে করায়। জল পরিশুদ্ধও করতে পারে এই বোতল। মোবাইলের সঙ্গে কানেক্ট করলে দিনে কতটা জল খাওয়া হল, তার হিসেবও দেখায়।
- পোর্টেবল আইস-মেকার: ছোট্ট এই মেশিনে জল ঢাললেই নিমেষে বরফ তৈরি হয়ে যায়। ব্যবহার করতে পারেন পছন্দের মোল্ড ও ফ্লেভারও। ইউএসবি কেবল দিয়েও ব্যবহার করা যায় এই আইস-মেকার।
গ্যাজেটের জন্য
বাইরের তাপে প্রায়ই গরম হয়ে যাচ্ছে মোবাইল, ল্যাপটপ। এগুলি ঠিক রাখতে ব্যবহার করতে পারেন—
- মোবাইল ফ্যান: ব্যবহার করতে পারেন মোবাইল ফোন কুলিং ফ্যান। বিশেষত যাঁরা মোবাইলে গেম খেলেন তাঁদের জন্য সুবিধেজনক। গেমিং বা ভিডিয়ো রেন্ডারিংয়ের সময়ে মোবাইল ঠান্ডা রাখতে কাজে লাগে। ক্লিপের সাহায্যে সহজে মোবাইলের পিছনে আটকে নেওয়া যায় এই ফ্যান। ম্যাগনেটিক ফ্যানও পাওয়া যায়। মোবাইল ওভারহিট হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচায়।
- ল্যাপটপের জন্য: কুলিং প্যাডের উপরে রেখে ব্যবহার করতে পারেন। এটি হল কুলিং জেল, ফ্যান-সহ একটা বেস প্ল্যাটফর্ম যার উপরে ল্যাপটপ রেখে কাজ করা যায়। ঠান্ডা হাওয়া নীচ থেকে ল্যাপটপ ঠান্ডা রাখে। ইউএসবির মাধ্যমে চলে।
এ ছাড়াও, গরম থেকে বাঁচতে মিনি ফ্রিজ়, কুলিং বেড শিট, স্মার্ট সানগ্লাস ইত্যাদিও ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন বৈদ্যুতিন পণ্যের দোকানে কিংবা অনলাইনে
সাধ্যের মধ্যেই সহজলভ্য এই সব গ্যাজেট।
কোয়েনা দাশগুপ্ত
গরমে আরাম পেতে
ফেস আইস রোলার: ছোট মাপের এই আইস রোলার বাইরের প্রচণ্ড গরম থেকে আরাম দিতে পারে। বরফ জমানোর সময়ে ইচ্ছে মতো ফুল বা ফলের নির্যাসও এতে ব্যবহার করতে পারেন। ইনসুলেটেড কেস থাকায় দীর্ঘক্ষণ বরফ ঠিক থাকে।
কুলিং জেল মাস্ক: মুখ ও চোখের জন্য এই মাস্ক পাওয়া যায়। গরমে পুড়ে যাওয়া ত্বকের যত্ন নিতে সাহায্য করে এটি। ফোলা চোখ, ডার্ক সার্কল, মাইগ্রেনের ব্যথা ইত্যাদিও কমাতে পারে।