দোষী চিহ্নিত করতে
সুবিধার বার্তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
নিজস্ব সংবাদদাতা
অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে ফরেন্সিক তথ্য-প্রমাণের গুরুত্বের কথা তুলে ধরলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নিউ টাউনে রবিবার কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (সিএফএসএল) নতুন ভবন উদ্বোধন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, এই প্রতিষ্ঠান পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে ন্যায়-বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন, ২০২৬-এর জানুয়ারি থেকে ফরেন্সিক সংক্রান্ত তথ্য থানায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হবে। তাঁর বক্তব্য, “অপরাধীদের বিচার যাতে আরও তথ্যনিষ্ঠ হয়, সেই কাজ শুরু হবে। এতে দ্রুত দোষীকে চিহ্নিত করে তদন্তে অনেক সুবিধা হবে।” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, গরিব মানুষ যাতে মাথা উঁচু রেখে যত দ্রুত বিচার পান, সে জন্য সিএফএসএল, এনএফএসইউ এবং রাজ্যের ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিকে নিজেদের ধর্ম পালন করতে হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিশেষ তদন্ত ছাড়া সাধারণ অপরাধে ৬০ দিনে চার্জশিট দেওয়া, বিশেষ অপরাধে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। অপরাধের শিকার যাঁরা, তাঁরা নির্ধারিত সময় অন্তর ফোনে মামলার সব তথ্য জানতে পারবেন। বিদেশে পালিয়ে যাওয়া অনুপস্থিত অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার কাজ শেষ করে সাজা দেওয়া হবে। পরে আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে তাদের দেশে ফিরিয়ে সাজা দেওয়া হবে।
বিচার প্রক্রিয়ায় ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) বদলে ন্যায় সংহিতা চালুর গুরুত্বও এ দিন ফের তুলে ধরেছেন শাহ। তিনি বলেছেন, “বিএনএস, বিএনএসএস, বিএসএ— এগুলি ভারতের মানুষের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে ভারতবাসীর জন্য বানানো হয়েছে। ইংরেজের তৈরি ১৬০ বছরের পুরনো আইনকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বাতিল করে আমরা নতুন ভারতে মানুষকে ন্যায় দেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করেছি।”
ফরেন্সিক সংক্রান্ত বিষয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপগুলির কথাও তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “এই ল্যাবরেটরির নতুন ভবনের (নিউ টাউনের) মাধ্যমে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, অসম, সিকিম-সহ পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বের সব রাজ্যের ক্ষেত্রে তথ্য-প্রমাণ ভিত্তিক ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।” ন্যাশনাল ফরেন্সিক সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ফরেন্সিক ডেটা সেন্টার তৈরি, ২০৮০ কোটি টাকার ‘ফরেন্সিক আধুনিকীকরণ যোজনা’ নিয়ে আসার মতো বিষয়গুলিও উল্লেখ করেছেন তিনি। দেশ জুড়ে তিন-চারটি রাজ্যের এক-একটি ক্লাস্টার করে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি তৈরিতে কেন্দ্র জোর দিয়েছে বলেও
জানিয়েছেন শাহ।
ফরেন্সিক ক্ষেত্রে শাহ বিশেষ ভাবে জোর দিয়েছেন প্রশিক্ষিত মানব সম্পদ তৈরিতে। এই সূত্রেই প্রতিটি রাজ্যে ন্যাশনাল ফরেন্সিক কলেজ তৈরির কথা জানানোর সঙ্গেই, প্রতিটি জেলায় মোবাইল ফরেন্সিক ভ্যান রাখার জন্য রাজ্যগুলিকে প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, প্রতি বছর ৩০ হাজার প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞ দরকার।