আতঙ্কের মধ্যেই দৃঢ়তার বার্তা ক্ষীর ভবানী যাত্রীদের
সাবির ইবন ইউসুফ
শ্রীনগর, ১ জুন: পহেলগামে জঙ্গি হামলার পরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে কাশ্মীরের জনজীবনে। উপত্যকা প্রায় পর্যটকশূন্য। কিন্তু তারই মধ্যে সাহস ও দৃঢ়তার বার্তা দিলেন ক্ষীর ভবানী মন্দিরের যাত্রীরা।
৩ জুন ক্ষীর ভবানী মেলা বসার কথা গান্ধেরবালের ক্ষীর ভবানী মন্দিরের কাছে। সেখানে যাওয়ার জন্য জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার তীর্থযাত্রী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কাশ্মীরি পণ্ডিতেরাও।
তীর্থযাত্রীদের মতে, এ কেবল ধর্মীয় কর্তব্য নয়। এই যাত্রা তাঁদের আত্মপরিচয়ের অঙ্গ। এ বারের মেলায় যোগ দিতে এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অনিল রায়না। তাঁর কথায়, ‘‘মাতা ক্ষীর ভবানী আমাদের কুলদেবী। তাঁর মন্দিরে যাওয়া আমাদের পবিত্র কর্তব্য। এ আমাদের ভূমি। আমরা ভয় পাচ্ছি না। এমন হামলা অনেক হয়। কিন্তু এখানে ব্যবস্থা চমৎকার।’’
এ বারেই প্রথম ক্ষীর ভবানী যাত্রায় যোগ দিতে এসেছেন অরবিন্দ শর্মা। তাঁর কথায়, ‘‘পহেলগাম হামলা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু এমন হামলার মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়। আমরা ওদের সফল হতে দেব না। মার দর্শন করতে যাওয়ার সময়ে ভয় পাওয়ার প্রশ্ন নেই।’’
কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সঙ্গে ক্ষীর ভবানী মন্দিরের যোগ সুপ্রাচীন। সারা বছর ধরে এই যাত্রার জন্য অপেক্ষা করেন যাত্রীরা।
পরিস্থিতি বুঝে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে প্রশাসন। চেক পয়েন্ট এবং আকাশ থেকে নজরদারির পাশাপাশি বাড়তি আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গান্ধেরবাল পুলিশের এসএসপি খালিদ পোসওয়াল বলেন, ‘‘আমরা সব ব্যবস্থা করেছি। তীর্থযাত্রীদের শুভেচ্ছা জানাই।’’ যাত্রীদের জন্য খাবার, নিকাশি, মেডিক্যাল সাহায্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনার অরবিন্দ কারওয়ানি।
তীর্থযাত্রী মোহিত কলের কথায়, ‘‘উপত্যকা থেকে উচ্ছেদ হওয়া, হিংসা-সব কিছু সত্ত্বেও আমরা গোটা বছর এই যাত্রার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। এখনও পরিস্থিতি কঠিন। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস আতঙ্কের চেয়েও বেশি শক্তিশালী।’’