‘ক্ষুধা’র গাজ়ায় গুলি, মানছে না ইজ়রায়েল
রাফা, ১ জুন: রাষ্ট্রপুঞ্জের ব্যাখ্যায় এই মুহূর্তে পৃথিবীর ‘ক্ষুধার্ততম’ স্থান গাজ়া ভূখণ্ড। প্রায় তিন মাস ধরে সেখানে ত্রাণ সামগ্রী ঢোকা বন্ধ রেখেছিল ইজ়রায়েল। সম্প্রতি কয়েকটি ত্রাণ বোঝাই ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এলাকায় খাদ্যসামগ্রী আসার খবর পেয়ে ভিড় জমিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। সেই মানুষজনের উপর এ বার নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল ইজ়রায়েলি বাহিনীর দিকে। অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখমের সংখ্যাটা দু’শো পেরোতে পারে বলে আশঙ্কা। সপ্তাহান্তে এমনই এক রবিবারের সকাল দেখল রাফা।
এ দিন সকালে ‘গাজ়া হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’এর তরফে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করা চলছিল রাফায়। জানতে পেরে ভিড় জমিয়েছিলেন অসংখ্য গাজ়াবাসী। প্রসঙ্গত, এই সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, যার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এদের সঙ্গে ত্রাণকার্য চালাতে অস্বীকার করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন। তাঁদের অভিযোগ, ইজ়রায়েল এবং আমেরিকার মদতপুষ্ট এই সংগঠন গাজ়া ভূখণ্ডের ভিতরে গতিবিধি বাড়াতে পরোক্ষ ভাবে ইজ়রায়েলকে সাহায্য করছে।
রবিবার সকালে ত্রাণ সামগ্রী পাওয়ার আশায় রাফার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছেছিলেন বছর চল্লিশের ইব্রাহিম আবু সাউধও। তিনি বলছিলেন, ‘‘ক্ষুধার্ত মানুষগুলো ত্রাণ বিতরণ শিবিরের দিয়ে এগিয়ে যেতেই ওরা (ইজ়রায়েলি বাহিনী) গুলি চালাতে শুরু করে।’’
তবে গুলি চলা বা প্রাণহানির কথা অস্বীকার করেছে ইজ়রায়েলি সেনা এবং ‘গাজ়া হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’, দু’পক্ষই। ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, ত্রাণবণ্টনের জায়গা থেকে এক কিলোমিটার দূরে রাতের দিকে জড়ো হয়েছিল হামাস ‘জঙ্গিরা’। সেখানেই ইজ়রায়েলি সেনাদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। ত্রাণ শিবিরে ইজ়রায়েলি গুলিতে সাধারণ গাজ়াবাসীর মৃত্যুর ঘটনাকে ‘পশ্চিম সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভুয়ো খবর’ বলে দাবি করেছে ইজ়রায়েল। কয়েকটি ইজ়রায়েলি সংবাদমাধ্যমে ত্রাণ শিবিরের ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেছে, ত্রাণ বিলি হয়েছে শান্তিপূর্ণ ভাবেই।
তবে প্রথমে গাজ়ায় ত্রাণ ঢুকতে না দেওয়া। তারপর সামান্য কিছু সংখ্যাক ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি প্রদান এবং সবশেষে ত্রাণ সংগ্রহে আসা ক্ষুধার্ত মানুষদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানোর পিছনে ইজ়রায়েলের বিশেষ কোনও ‘সমীকরণ’এর আঁচ পাচ্ছেন অনেকে। সংবাদ সংস্থা