কিশোর-নিগ্রহে ধৃত দুই, অধরাই মূল অভিযুক্তেরা
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও ইসলামপুর: মোবাইল চুরির অপবাদে কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার রবীন্দ্রনগরের কারখানায় এক নাবালকের উপরে অত্যাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তৌহিদ আলম ও মুস্তাক কামাল নামে দু’জনকে গ্রেফতার করল ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ। তবে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত, কারখানার মালিক মহম্মদ ফিরাজ ও তার দাদা ফারুক আলমকে গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠছে। বুধবার সকালে মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও নাবালককে উদ্ধারের দাবিতে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের ছ’ঘরিয়া এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে, পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। প্রায় এক ঘণ্টা পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি নাবালকের।
এ দিন দুপুরে ইসলামপুরে পৌঁছয় রবীন্দ্রনগর থানার তদন্তকারী দল। নিখোঁজ নাবালকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তারা। অভিযুক্তদের বাড়িতেও তল্লাশি চালায়। ইসলামপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, ‘‘যে হেতু অভিযোগটি অন্যত্র হয়েছে, তাই ওই এলাকার পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা সহযোগিতা করছি। পুরো বিষয়টি নজরে রাখা হয়েছে।’’
ঘটনার পরে কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও মূল অভিযুক্ত মহম্মদ ফিরাজ ও তার দাদাকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসী। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকে ভেঙে পড়েছেন বছর চোদ্দোর ওই কিশোরের মা। তিনি বলেন, ‘‘ছেলের উপরে কী এমন অত্যাচার করল যে, ওকে ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না!’’
মোবাইল চুরির অপরাধে এক কিশোরকে উল্টো করে ঝুলিয়ে অত্যাচারের ভিডিয়ো সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ছড়ায়। মাস দেড়েক আগে ওই কিশোর তার নাবালক দাদার সঙ্গে পড়শি এক যুবকের কলকাতার কারখানায় কাজ করতে এসেছিল। এর পর থেকে তার খোঁজ মেলেনি। এই ঘটনায় জড়িত থাকার
অভিযোগে ধৃত তৌহিদ ও মুস্তাককে বুধবার আলিপুর আদালতে হাজির করা হলে বিচারক পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
ধৃতদের টানা জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, তৌহিদ কারখানার মালিকের নিকটাত্মীয়। মালিকের নির্দেশে সে নিখোঁজ নাবালকের দাদাকে থানায় পৌঁছে দেয়। গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তকে জেরা করে কারখানার মালিকের হদিস পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি সূত্র মিলেছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। এ দিন আদালতে যাওয়ার পথে ধৃতেরা অবশ্য দাবি করে, ‘‘আসল অপরাধীকে ধরতে পারেনি পুলিশ। আমাদের ধরেছে। আমরা ওই ঘটনায় জড়িত নই।’’