সাধারণের অ্যাকাউন্টে প্রতারণার টাকা! ধৃত ৬
নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুললে মিলবে টাকা। এই প্রলোভনে পা দিয়ে অনেকেই আধার, প্যান কার্ডের তথ্য দিয়েছিলেন প্রতারকদের কাছে। সেই তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে রাখা হত প্রতারণার টাকা। পরে সেই টাকা অন্যত্র সরানো হত। একটি বাড়িতে গোলমালের ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে এমন তথ্য জানতে পেরেছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। সেই ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে প্রতারণার এমন পন্থার কথা। তার জেরে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করে মঙ্গলবার ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে নিমতা থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সৌরভ কর ওরফে পাপাই, প্রসূন দাস, শুভঙ্কর সরকার, রাজা লোহার, প্রিয়ব্রত ঘোষ এবং সুরঞ্জন সরকার। তাদের বুধবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রের খবর, নিমতা থানার অধীনে ডাক্তারবাগান এলাকায় পেশায় এক রংমিস্ত্রির বাড়িতে হাজির হন এক মহিলা-সহ তিন অভিযুক্ত। ওই রংমিস্ত্রি সম্প্রতি তাঁর অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেন। তাঁর অ্যাকাউন্টে গত এক বছরে দেড় কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছিল। ঘটনার দিন তিন অভিযুক্ত তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে ওই অ্যাকাউন্ট ফের খোলার বিষয়ে চাপ দেয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
এর পরে দুই অভিযুক্তকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে প্রতারণা চক্রের কারবারের কথা উঠে আসে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পারে যে, ওই রঙের মিস্ত্রি এক জন অভিযুক্তের বাড়িতে কাজ করতেন। ওই মিস্ত্রি পুলিশকে জানান, তাঁর মতো সাধারণ মানুষের অ্যাকাউন্টেই প্রতারণার অর্থ জমা করত অভিযুক্তরা। পরে সেখান থেকে টাকা সরানো হত। এর পরে ভাটপাড়ায় অভিযান চালিয়ে ব্যাঙ্ককর্মী প্রিয়ব্রতকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি, রিষড়া-সহ বেশ কিছু জায়গা থেকে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ধৃতদের সঙ্গে এক বিচারাধীন বন্দির যোগসূত্র রয়েছে। ইতিমধ্যে বিহার, গুজরাত, কেরল ও উত্তরাখণ্ডে প্রতারণার ঘটনায় অভিযুক্ত সৌরভের অ্যাকাউন্টের যোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, এটি একটি আন্তঃরাজ্য চক্রের কাজ বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান। ধৃতদের জেরা করে ওই চক্র সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।