বৈধ পথে শহরে আসা বাংলাদেশিদের তথ্য চাইল লালবাজার
শিবাজী দে সরকার
বৈধ ভিসা ও পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশের যে নাগরিকেরা ভারতে আসছেন, তাঁরা কলকাতা শহরে থাকছেন কিনা, থাকলে
কোথায় থাকছেন, ভিসার নিয়ম অমান্য করছেন কিনা— এমন নানা তথ্য জানার জন্য গোয়েন্দা শাখাকে নির্দেশ দিল লালবাজার। সেই সঙ্গে, অবৈধ ভাবে কোনও
বাংলাদেশি শহরে থাকছেন কিনা, তা-ও খোঁজ নিয়ে জানাতে বলা হয়েছে অফিসারদের। সম্প্রতি কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা গোয়েন্দা অফিসারদের নিয়ে একটি বৈঠকে ওই নির্দেশ দিয়েছেন। সূত্রের খবর, বাংলাদেশ থেকে বৈধ পাসপোর্ট বা ভিসা নিয়ে এসে
কলকাতায় বা পশ্চিমবঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের পরেও থেকে যাওয়ার উদাহরণ কম নেই। এমনকি, সব নিয়ম অমান্য করে এই রাজ্য
ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন বাংলাদেশিরা, এমন অভিযোগও অতীতে উঠেছে।
প্রসঙ্গত, ভারতে এসে ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও বসবাস করার অভিযোগে বেশ কয়েক জন বাংলাদেশিকে
গ্রেফতার করা হয়েছিল। বেআইনি ভাবে বাংলাদেশ থেকে এসে এখানে থাকার প্রমাণও কলকাতা পুলিশ পেয়েছে। কিছু দিন আগেই একটি দুর্ঘটনার সূত্র ধরে এক বাংলাদেশি ক্যাবচালকের সন্ধান পান কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা।
এক পুলিশকর্তা জানান, কলকাতা-সহ রাজ্যে ভুয়ো পাসপোর্ট চক্র ধরা পড়ার পরে ভুয়ো
নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়ে নড়ে বসে কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশ।
সেই সূত্রে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, কয়েকশো বাংলাদেশি নাগরিক পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে ভুয়ো ভারতীয় পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে চলে গিয়েছে। পুলিশের
একাংশের অনুমান, সেটি মাথায় রেখেই লালবাজারের তরফে এই রাজ্যে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের বর্তমান অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, ভিসা নিয়ে আসা বাংলাদেশিদের যেখানে থাকার কথা ছিল, সেখানে গিয়ে তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর করতে বলা হয়েছে গোয়েন্দা অফিসারদের। ওই নাগরিকেরা সেখানে না থাকলে কোথায় থাকছেন, সেই খোঁজও নিতে বলা হয়েছে।
লালবাজার জানিয়েছে, শুধু বৈধ ভাবে ভারতে আসা বাংলাদেশিরা নন, কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় কাজ করা ঠিকা শ্রমিকদের সম্পর্কেও খোঁজ নিতে বলা হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগকে। কারণ,
গোয়েন্দাদের মতে, কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে পারেন বাংলাদেশ থেকে আসা ভুয়ো নাগরিকেরা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য তাঁদের চিহ্নিত করে বাংলাদেশে পাঠানোর
চেষ্টা করছে। গত বছরের ৩০ নভেম্বর রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের একটি অতিথিশালা থেকে সেলিম মাতব্বর নামে এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যার কাছে ভারতে থাকার বৈধ নথি ছিল না। এ দেশে বেআইনি ভাবে
থাকার জন্য সম্প্রতি আদালত সেলিমকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করেছে।