উচ্চ প্রাথমিকে সুযোগ,
মামলা চাকরিহারাদের
কুন্তক চট্টোপাধ্যায় আর্যভট্ট খান
উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক পদে চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের চাকরি ছেড়ে উচ্চ প্রাথমিকে যেতে চাননি তাঁরা। তাই কাউন্সেলিংয়ে যোগ দেননি। কেউ কেউ কাউন্সেলিংয়ে গিয়ে সুপারিশপত্র নিলেও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের চাকরিতে যোগ দেননি। এ বার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের চাকরি বাতিল হতেই উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিতে যোগ দেওয়ার পথ খুঁজছেন অনেকে। সেই সুযোগ পেতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও করেছেন তাঁরা। এই মামলাগুলিতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) রিপোর্ট তলব করেছে আদালত।
মঙ্গলবার হাই কোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের গ্রীষ্মাবকাশকালীন বেঞ্চে একদল চাকরিপ্রার্থীর মামলা উঠেছিল। মামলাকারীদের আইনজীবী এক্রামুল বারি কোর্টে জানান যে তাঁর মক্কেলরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন। কিন্তু উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগে যোগ্য বলে চিহ্নিত। যেহেতু উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিং চলছে, তাই সেখানে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। এসএসসি-র আইনজীবী সুতনু পাত্র আপত্তি জানিয়ে বলেন যে মামলাকারীরা নথি যাচাই এবং পার্সোনালিটি টেস্টে অবতীর্ণ হননি। তাই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় তাঁরা যুক্ত হতে পারেন না।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতির নির্দেশ, মামলাকারীরা যে বিষয়গুলি বলেছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে এসএসসি-কে নিজেদের বক্তব্য এই মামলার নিয়মিত শুনানির দায়িত্বে থাকা বিচারপতির এজলাসে জমা দিতে হবে। গরমের ছুটি শেষের তিন সপ্তাহ পরে ফের মামলার শুনানি। হাই কোর্টের খবর, সুপ্রিম কোর্ট নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই বেশ কয়েকটি এই ধরনের মামলা দায়ের হয়েছে। কয়েকটির শুনানি আগেই হয়ে গিয়েছে। আর একদল মামলাকারীর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এই ধরনের মামলা গরমের ছুটির আগেই বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের এজলাসে শুনানি হয়েছিল। বিচারপতি ভট্টাচার্যও এসএসসি-র কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন।’’
প্রসঙ্গত, হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে উচ্চ প্রাথমিকে ১৪,০৫২ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে ছ’দফায় ১২,৫৫৪ জনের কাউন্সেলিং হয়েছে। এখনও ১৪১০ প্রার্থীর নিয়োগ বাকি আছে। সূত্রের খবর, সুপারিশপত্র হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পদে যোগ দিতে হয়। যোগ না দিলে সেটি বাতিল হয়ে যায়।
তবে আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, বিশেষ ক্ষেত্রে ৯০ দিনের সময়সীমা বাড়াতে পারে কমিশন। চাকরিহারাদের বাঁচাতে সরকার নানা পদক্ষেপের কথা বলছে। তা হলে এ ক্ষেত্রে কি নরম অবস্থান এসএসসি নিতে পারে না?
এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘সুপারিশপত্রের মেয়াদ ৯০ দিন থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশন আইন অনুযায়ী যে পদক্ষেপ করবে, তা-ই মেনে নিতে হবে।’’