জনগণনা শুরু করবে কেন্দ্র
কেবল খবরে থাকতে ভালবাসে, কিন্তু সময়ে কাজ শেষ করতে পারে না।’’
দশ বছর অন্তর জনগণনার নিয়ম অনুযায়ী জনগণনা হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালে। কিন্তু সে সময়ে করোনা সংক্রমণের কারণে ওই কাজ ভেস্তে যায়। আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী ১৬ জুন জনগণনা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি জারি হতে চলেছে। ওই দিন থেকেই সরকারি ভাবে জনগণনার কাজ শুরু হচ্ছে বলে ধরা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০২৭ সালের ১ মার্চকে জনগণনার জন্য ‘রেফারেন্স ডেট’ হিসাবে ধরা হবে। তবে প্রান্তিক এলাকা যেমন লাদাখ, জম্মু-কাশ্মীরের বরফে ঘেরা অংশ, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের প্রবল ঠান্ডার কথা মাথায় রেখে ওই এলাকাগুলির জন্য ‘রেফারেন্স ডেট’ কিছু দিন পিছিয়ে ১ অক্টোবর ২০২৬ ধরা হয়েছে।
সূত্রের মতে, রেফারেন্স ডেট হল, এমন একটি দিন যার ঠিক এক বছর আগে প্রশাসনিক সীমানা ‘ফ্রিজ়’ করে দেওয়া হয়। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, যেহেতু জনগণনার কাজ মূলত শিক্ষক-শিক্ষিকারা করে থাকেন, তাই মার্চে বার্ষিক পরীক্ষা শেষের পরে ২০২৬-এর এপ্রিল থেকে কাজ শুরু হবে। জনগণনার প্রশ্নাবলিতে জাতের বিষয়ে একটি নতুন কলাম যোগ হবে। জনগণনার সময় তফসিলি জাতি, জনজাতির সংখ্যা গোনা হয়। এ বার ওবিসি-দের সংখ্যাও গোনা হবে।
অতীতের উদাহরণ তুলে আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রায় দেড় দশক আগে যে জনগণনা হয়েছিল, সেটিও দু’টি ভাগে করা হয়েছিল। প্রথম ধাপে, ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর এই ছয় মাস ধরে দেশের সমস্ত বাড়ি-ঘর তালিকাভু্ক্ত করেছিলেন কর্মীরা। পরবর্তী ধাপে ২০১১ সালের ৯-২৯ ফেব্রুয়ারি, এই কুড়ি দিনে সেই বাড়িতে কারা থাকেন সেই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। সে বছর রেফারেন্স ডেট ধরা হয়েছিল ১ মার্চ ২০১১-কে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০২১ সালেও দু’ধাপে ডিজিটাল পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রাথমিক সব কাজ শেষ করে ফেলা হয়েছিল। সে বছরের এপ্রিল মাসে কিছু রাজ্যে জনগণনা কাজ শুরু হওয়ার আগেই করোনা থাবা বসায় বলে গোটা প্রক্রিয়া আটকে যায়।
এ বারের জনগণনা ঘোষণার আগে বিরোধী এবং শরিক দলগুলির চাপের মুখে গত ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা জনগণনার সঙ্গে
জাতগণনা করার কথা ঘোষণা করে। ওই সমীক্ষা হলে দেশে ওবিসিরা যে মূল জনসংখ্যার অধের্কের বেশি, সেই তথ্য সামনে উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে সংরক্ষণের
বর্তমান কাঠামো ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উচ্চবর্ণ বা জেনারেল ক্যাটেগরির জন্য নির্দিষ্ট আসন থেকেও তখন সংরক্ষণের ভাগ চাইতে পারেন ওবিসি-রা। সেটা যথেষ্ট চিন্তায় রেখেছে বিজেপিকে।
নতুন জনসংখ্যার ভিত্তিতে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টিও আটকে রয়েছে দীর্ঘ সময়। জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন বাড়লে বিজেপি-ঘেঁষা গো-বলয়ের রাজ্যগুলিতে যেমন আসন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ভাল কাজ করে দক্ষিণের রাজ্য-সহ পশ্চিমবঙ্গের আসন কমার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই বৈষম্য নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে দক্ষিণের দলগুলি। আসন পুনর্বিন্যাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সংসদে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি। কোন সমীকরণে শাসক দল যাবতীয় সমস্যা মেটাতে সক্ষম হয়, তা-ই
এখন দেখার।